করোনায় বিদেশে এক্সচেঞ্জ হাউস বন্ধ হওয়ার পর বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে অ্যাপভিত্তিক মাধ্যমগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে বিকাশ সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। রকেটের মাধ্যমেও বড় অঙ্কের রেমিটেন্স আসছে।
এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক নিজস্ব একটি অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী আয় গ্রহণ শুরু করেছে। আর নগদ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, আমরা খুব দ্রুত রেমিটেন্স সেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি।
তবে অ্যাপসে টাকা পাঠানো বাড়লেও সার্বিকভাবে রেমিটেন্স পাঠানো অনেক কমে গেছে। এপ্রিলে মাত্র ১০৮ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ অঙ্ক আগের মাসগুলোর তুলনায় অনেক কম, একক মাসের হিসাবে আড়াই বছর পর সবচেয়ে কম রেমিটেন্স এসেছে এ মাসে।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ৮৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তারপর থেকে প্রতি মাসেই রেমিটেন্স এসেছে ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। একক মাসের হিসাবে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল ২০১৮ সালের মে মাসে, প্রায় ১৭৫ কোটি ডলার।
সূত্রমতে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউনের মধ্যে বিকাশে বেশি রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এপ্রিলে ১০৬ কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তারা। বিকাশের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স আসা শুরু হওয়ার পর একক মাসের হিসাবে এত বেশি রেমিটেন্স আর কখনও আসেনি। মার্চের চেয়ে এপ্রিলে চারগুণ বেশি রেমিটেন্স এসেছে। মার্চে বিকাশের মাধ্যমে ২৭ কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
এপ্রিল মাসে বিকাশের মাধ্যমে রেমিটেন্স লেনদেন হয়েছে ৯২ হাজারেরও বেশি। মার্চে এ সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজার। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকিং চ্যানেল হয়ে বৈধভাবে দেশে বিকাশের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠানোর সেবা চালু হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম যুগান্তরকে বলেন, প্রবাসী ও দেশে অবস্থানকারী প্রিয়জন উভয়ই ঘরে অবস্থান করছেন। অর্থ প্রেরণকারী বাইরে না গিয়ে তার নিজের মোবাইল থেকে অনলাইন বা ওয়ালেটভিত্তিক মানি ট্রান্সফার সেবার মাধ্যমে দেশে তার স্বজনের বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাচ্ছেন। ফলে এ সময়ে বিকাশ অ্যাকাউন্টে রেমিটেন্স আসার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিকাশ ৬টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে বিশ্বের ৯৩টি দেশ থেকে রেমিটেন্স গ্রহণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিকাশে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্য থেকে।
এপ্রিল পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ শতাংশ। এর একটি অংশ আসে অ্যাপসের মাধ্যমে।
জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে অ্যাপসটি চালু করা হয়। প্রাথমিকভাবে সিঙ্গাপুরে এটি চলমান রয়েছে। করোনায় লকডাউনের মধ্যে অ্যাপসটির মাধ্যমে রেমিটেন্স আসছে। পুরো চিত্র এখন বলতে পারব না। উদ্বোধনের পর শুধু এক দিনেই এসেছে ৩০ হাজার ডলার। অ্যাপসটি ধীরে ধীরে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে চালু করা হবে।