এসডি ডেস্ক : করোনার প্রকোপ এখন সারা বিশ্ব জুড়ে। করোনায় টাক মাথা মানুষের ঝুঁকি বেশি বলে বলছে যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক।
পুরুষদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের মতো অ্যান্ড্রোজেন বা লিঙ্গ নির্ধারক হরমোন থাকে। এই হরমোনগুলো শুধু চুল পড়ার ক্ষেত্রেই নয়, বরং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার মতো বিষয়গুলোতেও প্রভাব রাখতে পারে। আর সম্প্রতি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা নারীদের তুলনায় পুরুষের বেশি।
যুক্তরাজ্যের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক কার্লোস ওয়াম্বিয়ার নেতৃত্বে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষকদের দাবি মাথায় চুল নেই এমন পুরুষদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় বেশি। এমনকি কয়েকজন গবেষক টাক মাথাকে ঝুঁকির কারণ হিসেবে ঘোষণা করতে চাচ্ছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষক চিকিৎসক ডাঃ ফ্রাঙ্ক গ্যাব্রিন করোনায় মারা যাওয়ার পর তার নাম অনুসারে এই ঝুঁকির নামকরণ করা হয়েছে গ্যাব্রিন সাইন। ওই চিকিৎসকের মাথায়ও টাক ছিল।
গেল বছরের শেষ থেকে চীনের উহানে করোনার উৎপত্তির পর দেখা যায় করোনাভাইরাসে পুরুষদের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের জনস্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, কোভিড -১৯ শনাক্ত কর্মক্ষম বয়সী পুরুষদের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা নারীর চেয়ে দ্বিগুণ। কিন্তু টাক মাথার সঙ্গে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকির বিষয়টা বিজ্ঞানীরা এতদিন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তারা মানুষের জীবনযাত্রা, ধূমপান এবং বিভিন্ন লিঙ্গের মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পার্থক্যের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খোঁজার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
সাম্প্রতিকগবেষণায় উঠে এসেছে পুরুষদের শরীরের হরমোন চুল পড়ার ক্ষেত্রেই নয়, বরং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার মতো বিষয়গুলোতেও প্রভাব রাখতে পারে। এই ফলাফল থেকে তারা ধারণা করছেন, মাথায় টাক পড়া ঠেকাতে বা ক্যান্সার চিকিৎসায় হরমোন নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলো করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রফেসর ওয়াম্বিয়ার বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি অ্যান্ড্রোজেন বা পুরুষ হরমোনগুলোর মাধ্যমে আমাদের কোষে ভাইরাস প্রবেশ করে।’
এর পরপরই অধ্যাপক ওয়াম্বিয়ারের নেতৃত্বে স্পেনে দুইটি জরিপ চালোনো হয়। সেখানে দেখা গেছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে টাকমাথার পুরুষদের সংখ্যা অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। তবে এ নিয়ে যথার্থ প্রমাণ খুঁজে পেতে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।