দর্পণ ডেক্স : ০৭ জুন- পুলিশি নির্যাতনে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু যে ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রে সীমাবদ্ধ নেই। ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে জাপানের টোকিও পর্যন্ত।এই বিক্ষোভে উত্তাল হচ্ছে সারা বিশ্ব।পুলিশি নিপীড়ন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ক্রমেই জোরালো হচ্ছে বিক্ষোভের মাত্রা।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়। ফ্লয়েড হত্যার বিচার দাবিতে ও বর্ণবাদের অবসান চেয়ে লন্ডন ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে ম্যানচেস্টার, কার্ডিফ, লেচেস্টার, শেফিল্ডের মতো বড় বড় শহরে।দিনব্যাপী লন্ডনের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থকালেও সন্ধ্যার দিকে ডাউনিং স্ট্রিটে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের একটি দলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।পুলিশ ১৪ জনকে আটক করেছে।পুলিশের ১০ সদস্য এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছেন।তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়টি ভাবিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলকে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সবার নিরাপত্তার জন্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা জরুরি।’ তবে পুলিশ কমিশনার ডেম ক্রেসিডা ডিক বিক্ষোভকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
বেশিরভাগ বিক্ষোভকারীকে অবশ্য মাস্ক পরা অবস্থায় দেখা গেছে। অনেকে হ্যান্ড গ্লাভসও পরে ছিলেন। অনেকের হাতে নানা ধরনের স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। একটিতে লেখা ছিল, ‘বর্ণবাদ করোনাভাইরাসের চেয়েও ভয়াবহ।’ নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও গ্লাসগোতেও পুলিশি নিপীড়ন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বড় বিক্ষোভ হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাজ্য ছাড়াও ইউরোপের ফ্রান্স ও জার্মানিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। দিনের প্রথমভাগে পূর্বের দুই দেশ অস্ট্রেলিয়া ও জাপানেও পুলিশি নিপীড়ন ও বর্ণবাদের অবসান চেয়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে যাতে কোনো ধরনের বিক্ষোভ না হয় সেজন্য বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল স্থানটিতে। সেসব উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ সেখানে বিক্ষোভ করেছে। বড় বিক্ষোভ হয়েছে আইফেল টাওয়ারের সামনে।
জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল ডয়েচে ভেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশের হাতে ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডকে ‘ভয়ানক’ ও ‘বর্ণবাদী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, ‘আমি যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তারা এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে।’
গতকাল শনিবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বর্ণবাদবিরোধী বিশাল বিক্ষোভ হয়েছে। শহরের কেন্দ্রে সে বিক্ষোভে হাজার হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। ফ্লয়েড হত্যার বিচার চাওয়ার পাশাপাশি নিজ দেশেও বর্ণবাদের অবসান চেয়েছে তারা।