দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করার কথা বলা হলেও নিয়মিত করোনায় আক্রান্ত শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই পর্যন্ত ৪১৭ জন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৫ জন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শ্রমিকদের কাজ করাচ্ছেন উদ্যোক্তা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) দেওয়া গাইড লাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মান হচ্ছে কারখানাগুলোতে। তবে বড় বড় কারখানাগুলো মানা সম্ভব হলেও ছোট মাঝারি কারখানাগুলো মান ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব নয়।
পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সূত্র জানায়, খোলা কারখানার উদ্যোক্তা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ডাব্লিউ এইচ ও দেওয়া গাইড লাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানার শ্রমিকরা কাজ করছে। করোনাকালে প্রতিটি কারখানায় মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। কারখানায় হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব মানার পাশাপাশি জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
শিল্প পুলিশের তথ্য মতে, তৈরি পোশাক খাতের ১৭৪টি কারখানায় ৪১৭ জন পোশাক শ্রমিক এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২২১ জন শ্রমিক আর মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।
বিজিএমইএ’র ৬৫টি কারখানায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২১৪ জন, সুস্থ হয়েছেন ৭৭ জন আর মারা গেছেন ৪ জন। বিকেএমইএ’র ৩১টি কারখানায় ৯৩ জন আক্রান্ত, সুস্থ হয়েছেন ৭১ জন। বিটিএমএ’র ৩টি কারখানায় ৪ জন আক্রান্তেরর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দু’জন। বেপজার ৫১টি কারখানায় ৭০ জন আক্রান্ত, এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৫২ জন। এ ছাড়া পোশাক কারখানা ছাড়া অন্য ২৪টি কারখানায় ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মারা গেছেন একজন।
শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা প্রতিটি কারখানায় কভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও সুস্থদের তথ্য প্রতিদিন হালনাগাদ করছি। এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক শিল্পে ৩৮১ জন শ্রমিক আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ গেছে ৪ জন শ্রমিকের।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই উৎপাদনে আছে কারখানা- এমন দাবি পোশাক শিল্প উদ্যোক্তাদের। এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র পরিচালক ফজলে শামিম এহসান বলেন, কারখানায় প্রবেশের আগে প্রতিটি শ্রমিকের হাত ধোয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের থার্মাল দিয়ে তাপমাত্রা মেপে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে কারখানায় প্রবেশ করতে হচ্ছে। প্রবেশপথে তাদের শরীরে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে, কারখানার ফ্লারেও জীবাণুনাশক ছিঁটানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, এরপরও যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ব্যয়ভার মালিকরা বহন করছেন। অনেকে কারখানায় আইসোলেশনের ব্যবস্থা করেছেন, যাদের ছোট কারখানা তারা শ্রমিকদের বাসায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে হবে। এটা মানা না হলে শ্রমিক মৃত্যু বলা যাবে না এটা হত্যার শামিল হবে। টেস্ট করাতে পারছে না, করোনার লক্ষণ দেখা গেলে তাদের কোয়ারেনটাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ১৪ দিন পর এলে আর কাজে যোগ দিতে দিচ্ছেন মালিকরা।