মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব কটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে সাতটি ‘মিলিয়ন ডলার’ দুর্নীতির মামলা রয়েছে। এর আগে তিনি বিশ্বাস ভঙ্গ, মানি লন্ডারিং এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন।
এ মামলাটিকে আইনের শাসন এবং দুর্নীতি-বিরোধী প্রতিশ্রুতি বিষয়ে মালয়েশিয়ার অবস্থানের এক ধরণের পরীক্ষা মনে করা হয়।
ওয়ান মালয়েশিয়ান ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ ওয়ানএমডিবি কেলেঙ্কারির মাধ্যমে মূলতঃ বৈশ্বিক জালিয়াতি এবং দুর্নীতিতে দেশটির সম্পৃক্ততার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।
ওয়ানএমডিবি প্রকল্পের ৪২ মিলিয়ন রিঙ্গিত অর্থাৎ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ তৎকালীন মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল।
নাজিব রাজাক ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন।
বিচারক মোহামেদ নাজলান মোহামেদ ঘাজালি কুয়ালালামপুর হাইকোর্টকে বলেছেন, “সব সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছে।”
তবে, তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির সব অভিযোগ অস্বীকার করে মি. রাজাক দাবি করেছেন, তার তৎকালীন অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের বিশেষ করে পলাতক ধনকুবের ঝো লো’র মাধ্যমে তিনি ‘মিসলেড’ মানে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিলেন।
ঝো লোর বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেই আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তার একেকটির জন্য ১৫ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
রায়ের আগে তিনি বলেছিলেন, দোষী প্রমাণিত হলে তিনি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তহবিল সংগ্রহের জন্য ২০০৯ সালে ওয়ানএমডিবি প্রকল্প নেয়া হয়। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রথম ব্যাংক এবং বন্ড-মালিকদের মাসিক কিস্তি প্রদানে ব্যর্থ হবার পর এর কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রথম প্রশ্ন ওঠে।
পরে এ প্রকল্প নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যে তহবিল তসরুফ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে তা দিয়ে বিলাসবহুল বাড়ী, প্রাইভেট জেট, ভ্যান গগ ও মনেটের চিত্রকর্ম, এমনকি হলিউডে ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র নির্মাণেও ব্যয় করা হয়েছে।
২০১৮ সালে নির্বাচনে নাজিব রাজাকের পরাজয়ের পেছনে দুর্নীতির অভিযোগ একটি বড় কারণ