বছরের পর বছর কিংবা সারাজীবন এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন এনে শিক্ষকদের নির্ধারিত সময় পর পর বদলি বাধ্যতামূলক করা হবে। বদলির এই ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে এই নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের চাকরি বদলিযোগ্য করা হবে। তাদের ৩ বছর পর পর অথবা ৫ বছর পর পর এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে বদলি করা হবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তিন বছর পর অথবা ৫ বছর পর বিবেচনা করে প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। তবে শিক্ষকদের যাতে ভোগান্তি না হয় সে কারণে কাছাকাছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বদলি করার ব্যবস্থা রাখা হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের তিন বছর পর পর বদলি করার নিয়ম থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষকদের বেলায় তা করা হয় না। এই প্রথম এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রণালয়। সিনিয়র সচিব আরও বলেন, ‘বদলি নিয়ে যে একটা অনৈতিক কাজ দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে। সেটা বন্ধ করবো। ন্যায় বিচার যাতে হয় সেটা দেখবো।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষক বদলি নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন সময়। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বদলির সুযোগ দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক বদলিতে তদবির শুরু হয়। বিগত বছরগুলোতে শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এই দুর্নীতি দূর করতে অনলাইনে শিক্ষক বদলির উদ্যোগ নেয় মন্ত্রণালয়। কিন্তু এখনও তা চালু করা সম্ভব হয়নি।
সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন জানান, শিগগিরিই অনলাইনে শিক্ষক বদলি শুরু হবে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি জীবন শেষ করেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষক। সুবিধাজনক জায়গায় যেতে বদলি হতে চান তারা। শিক্ষকদের এই সুবিধা বিবেচনা করে বছরে একবার বদলির সুযোগ দেওয়া হতো।