মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে বর্তমানে জীবনযাত্রায় কিছুটা স্বাভাবিকতার ছোয়া লাগার জন্য সেপ্টেম্বরের শুরুতে বা মাঝামাঝিতে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ৩১ আগস্টের পর ছুটি যদি আর বাড়ানো না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে।
সূত্রমতে, কয়েকধাপে বেড়ে সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি আছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সেশনজট, সিলেবাসসহ নানা বিষয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ কল্যাণ্যের কথা চিন্তা করে অনেকেই প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কথাও বলছেন।
সর্বশেষ তথ্যনুসারে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি পোষাতে দুই ধরনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। এরমধ্যে সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা সম্ভব হলে চলতি বছরই সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে শিক্ষাবর্ষ শেষ করা হবে। তা না হলে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষ বাড়ানো হবে। এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সময় কমিয়ে সমন্বয়ের চেষ্টা করা হবে।
সূত্র বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে কয়েক ধাপে সব প্রতিষ্ঠানগুলো খোলা হবে। সংশ্লিষ্টরা শিশু শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি বিবেচনা করে সর্বশেষ প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার কথা ভাবছেন। প্রথমে খোলা হবে বিশ্ববিদ্যালয় এরপর খোলা হবে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পরে মাধ্যমিক এবং সবার শেষে প্রাথমিক বিদ্যালয়।
দেশের প্রাথমিক শিক্ষা দেখভাল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্কুলে ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব আকরাম-আল-হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সেপ্টেম্বরের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা কম। পরিস্থিতি ভালো হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। দুই মন্ত্রণালয় মিলে সিদ্ধান্ত হবে। আগে বাচ্চাদের নিরাপত্তা। তারপরে অন্য কিছু।
এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষে খোলার বিষয়ে তিনি বলেন, বাচ্চাদের নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার আগে। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি পোষাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচ মিনিট টোল ফ্রি পরামর্শও চালু করা হচ্ছে। এছাড়া রেডিওতে ক্লাস চালুর পাশাপাশি আরো কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সংক্রমণের পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকতে পারে। শিক্ষামন্ত্রীও বিভিন্ন সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হবে না। পরিস্থিতি ভালো হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার মধ্যেই আমরা এসএসসির ফল প্রকাশ করেছি। একাদশে ভর্তি কার্যক্রমও শুরু করতে যাচ্ছি, তবে আটকে আছে এইচএসসি পরীক্ষা। এখন এইচএসসি পরীক্ষা নিতে হলে কমপক্ষে ১৫ দিন ২০ থেকে ২৫ লাখ লোকের চলাফেরা বাড়বে। এতে ভীতি থেকেই যাচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘদিন করোনা থাকলে আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে। আমরা সবকিছু নিয়েই কাজ করছি, পরিকল্পনা করছি। তবে আরো কিছুদিন সময় নিতে চাই।