Dhaka , Sunday, 15 December 2024

জনসমর্থনহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বন গুম : মির্জা ফখরুল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : 02:49:37 pm, Saturday, 29 August 2020
  • 542 বার

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনসমর্থন ও ভোটারবিহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।

আজ শনিবার সকালে আগামীকাল ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠাতব্য আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ বিবৃতি দেয় বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্বৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। স্বৈরাচারি সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্য নিখোঁজ করে দেয়।’

গুমকে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমকে প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি করে তুলেছে। বিরোধীদল শূন্য একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্যই গুমকে পথের কাঁটা দূর করার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন বিএনপিনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ অসংখ্য মানুষ।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাঁকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। এই নতুন ধরনের ঘটনা দেশবাসীকে অজানা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনো পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। রাষ্ট্র সমাজে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী। মূল লক্ষ্য বিরোধী কণ্ঠকে নির্মূল করা, সমালোচনার অবসান ঘটানো। গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনসমর্থনহীন ও ভোটারবিহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবল একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জন-জীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ক রেজুলেশন গৃহীত

জনসমর্থনহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বন গুম : মির্জা ফখরুল

আপডেট টাইম : 02:49:37 pm, Saturday, 29 August 2020

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনসমর্থন ও ভোটারবিহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।

আজ শনিবার সকালে আগামীকাল ৩০ আগস্ট অনুষ্ঠাতব্য আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে এ বিবৃতি দেয় বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে উদ্বৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। স্বৈরাচারি সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্য নিখোঁজ করে দেয়।’

গুমকে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমকে প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি করে তুলেছে। বিরোধীদল শূন্য একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্যই গুমকে পথের কাঁটা দূর করার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এই নৃশংস গুমের শিকার হয়েছেন বিএনপিনেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু ও চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ অসংখ্য মানুষ।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আরেকটি অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাঁকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে অন্য দেশে। এই নতুন ধরনের ঘটনা দেশবাসীকে অজানা আতঙ্কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। গুম হওয়া মানুষদের বেদনার্ত পরিবাররা এখনো পথ চেয়ে বসে আছে প্রিয়জনদের ফিরে আসার সম্ভাবনায়। রাষ্ট্র সমাজে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার বোধ সৃষ্টির জন্যই গুমকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী। মূল লক্ষ্য বিরোধী কণ্ঠকে নির্মূল করা, সমালোচনার অবসান ঘটানো। গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনসমর্থনহীন ও ভোটারবিহীন সরকারের টিকে থাকার অবলম্বনই হচ্ছে গুম। এই ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ অরাজকতার ঘন অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবল একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করা হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জন-জীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।’