নারায়ণগঞ্জে এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে আদালতে তিন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পর ওই কিশোরীর জীবিত ফেরার ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুনকে এবার বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি নির্ধারিত সময়ের আগেই আমাকে রিপোর্ট দিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এসআই শামীম আল মামুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তদন্তের রিপোর্টে তাঁর কার্যক্রমে অসচেতনতার ছাপ পাওয়া গেছে। তাই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা ১৫ বছরের এক কিশোরী গত ৪ জুলাই নিখোঁজ হয়। দীর্ঘদিন খোঁজ করে মেয়ের সন্ধান না পেয়ে এক মাস পর ৬ আগস্ট থানায় অপহরণ মামলা করেন তাঁর বাবা। এ ঘটনায় কিশোরীর মায়ের মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে গত ৭ ও ৮ আগস্ট পুলিশ একই এলাকার প্রেমিক আবদুল্লাহ, অটোচালক রকিব ও নৌকার মাঝি খলিল নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এ তিন আসামি দুদফা রিমান্ড শেষে কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে ৯ আগস্ট আদালতে জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে আসামিরা জেলহাজতে রয়েছে। ঘটনার প্রায় ৫০ দিন পর গত ২৩ আগস্ট মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকা থেকে ওই কিশোরীকে জীবিত ফিরে পাওয়ার পর তার বাবা-মা বিষয়টি রাতে সদর থানায় জানায়।
স্বজনদের দাবি, তাদের মেয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং অন্য এক যুবক ইকবাল হোসেনের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে ভাড়া বাসায় বসবাস করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে এখন তাদের আর কোনো অভিযোগ নেই এবং মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
এদিকে মৃত কিশোরীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় দুই আসামিকে জামিন দেননি আদালত। গতকাল সোমবার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাওসার আলমের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এ ছাড়া ওই কিশোরীর কথিত স্বামী ইকবালের রিমান্ড আবেদনও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।