সৌদি আরবের বেশ কয়েকজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির বাদশাহ, যাদের মধ্যে রাজ পরিবারের দুইজন সদস্যও রয়েছেন।
রাজকীয় একটি আদেশে ইয়েমেনে লড়াইরত সৌদি নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর কমান্ডারের পদ থেকে প্রিন্স ফাহাদ বিন তুরকিকে অব্যাহতি দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান।
মি. ফাহাদের ছেলে আবদুলাজিজ বিন ফাহাদকেও ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এই দুইজনসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘সন্দেহজনক আর্থিক লেনদেনের’ অভিযোগের তদন্ত করা হবে বলে ওই রাজকীয় আদেশে বলা হয়েছে।
সরকারের ভেতর কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি অভিযান পরিচালনা করছেন বাদশাহের ছেলে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, যাকে সৌদি আরবের অঘোষিত শাসক বলে মনে করা হয়।
তবে সমালোচকরা বলেন, শীর্ষ পদের এসব গ্রেফতারের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে যুবরাজের ক্ষমতা গ্রহণের বাধাগুলো দূর করা।
এর আগে এই বছরের শুরুর দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল যে, বাদশাহর ছোটভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুলাজিজ ও সাবেক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়িফসহ তিনজন জ্যেষ্ঠ রাজ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটেছিল ২০১৭ সালে যখন রাজপরিবারের অনেক সদস্য, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীকে রিয়াদের রিটজ-কার্লটন হোটেলে আটকে রাখা হয়।
পরবর্তীতে সৌদি আরবের রাষ্ট্রের তহবিলে ১০৬.৭ বিলিয়ন ডলার দেয়ার সমঝোতায় তাদের বেশিরভাগকে ছেড়ে দেয়া হয়।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পঁয়ত্রিশ বছরের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান রক্ষণশীল দেশ সৌদি আরবে বেশ কিছু অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সংস্কার আনার কারণে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হন।
তবে বেশ কিছু স্ক্যান্ডালেরও মুখোমুখি হতে হয় তাকে। যার মধ্যে রয়েছে ২০১৮ সালে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ড এবং কানাডায় সাবেক একজন সৌদি গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে হত্যার কথিত অভিযোগ।
ইয়েমেনে অব্যাহত যুদ্ধের জন্যও তার বিরুদ্ধে সমালোচনা রয়েছে, যেখানে সরকারপন্থী বাহিনীকে সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব। নারীদের গাড়ী চালনা থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হলেও নারী অধিকার কর্মীদের ওপর বিরূপ আচরণের জন্যও তার সমালোচনা রয়েছে।