নিজের বান্ধবীকে বিয়ে করলেন নারী থেকে পুরুষে রূপান্তরিত জাইন। গত ৩০ আগস্ট উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন দুজনে।
সুলতানা থেকে জাইন। জন্মেছিলেন নারী হয়েই। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শরীরে আসতে থাকে পরিবর্তন। নারী উপসর্গের সঙ্গে সঙ্গে পুরুষালি ভাবও আসতে থাকে শরীরে।
অস্বস্তিকর এক অবস্থার মধ্যেই লেখাপড়া চালিয়ে যেতে থাকেন সুলতানা। বাইরে বের হতেন খুব কম। হয়ে পড়েন ধার্মিক একজন মানুষ। এভাবেই পাস করেন স্নাতক। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয় বগুড়ার শিববাটি এলাকার মাহবুবা আক্তারের সঙ্গে। গড়ে ওঠে গভীর বন্ধুত্ব। মাহবুবার কাছে সুলতানা খুলে বলেন নিজের শারীরিক সমস্যার কথা। উভয়ের পরিবারের সম্মিলিত উদ্যোগে সুলতানাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের নয়াদিল্লিতে। সেখানে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের অস্ত্রোপচার ও হরমোন পরিবর্তনের পদ্ধতি প্রয়োগ করেন চিকিৎসকরা।
অস্ত্রোপচার শেষে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন সুলতানা। একইসঙ্গে পূর্ণ পুরুষে রূপান্তরিত হয়ে যান তিনি। নাম পরিবর্তন করে হয়ে যান জাইন। তিনি নিজেই এসব কথা জানিয়েছেন।
নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌর এলাকার পরিচিত একটি মহল্লার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার সন্তান সুলতানা। তিনি মেয়ের মধ্যে তিনিই সবার বড়। বয়ঃসন্ধিকাল থেকে মেয়ের পরিবর্তনে অনেক চিন্তায় ছিলেন বাবা। শেষ পর্যন্ত সমাধান মেলায় এবং তাঁর মেয়ে ছেলেতে পরিণত হওয়ায় বেশ খুশি হলেও বিষয়টি নিয়ে খুব একটা ঘাটাঘাটি করতে চান না তিনি।
এদিকে সুস্থ হওয়ার পর উভয় পরিবারে সম্মতিতে সেই বান্ধবী মাহবুবাকেই বিয়ে করেন জাইন। গত ৩০ আগস্ট পরিবারসহ বগুড়ায় গিয়ে বান্ধবী মাহবুবাকে বিয়ে করেন জাইন। স্ত্রীকে নিয়ে বড়াইগ্রামের নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন তিনি।
তাঁরা এখন সুখে আছেন বলে জানান জাইনের বাবা। স্নাতক পাস করলেও শারীরিক সমস্যার কারণে চাকরির চিন্তা করেননি জাইন। এরই মধ্যে চলে গেছে সরকারি চাকরির বয়স। সে পথে তেমন আগ্রহও নেই জাইনের। ছোট দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে আগেই। তাই বাবার জমি-জমা দেখাশুনা করে সেখানকার আয় থেকেই জীবিকা নির্বাহ করতে চান জাইন।