Dhaka , Monday, 2 December 2024

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেকর্ড লেনদেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : 07:32:53 am, Wednesday, 9 September 2020
  • 658 বার

করোনা মহামারিতে মানুষ যতটা পারছে ঘরে থাকার চেষ্টা করছে। তবে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে মানুষকে টাকা আদান প্রদান করতে হচ্ছে। এখন অনলাইনে কেনাকাটা থেকে শুরু করে, ইউটিলিটি বিল প্রদান, চাকরির বেতন পর্যন্ত সবই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হচ্ছে। আর যখন খুশি টাকা উঠানো, টাকা পাঠানো, মোবাইল ফোনে রিচার্জ করার মতো সুবিধা তো রয়েছেই।

মূলত, ব্যাংকে যাওয়ার ঝামেলা কমাতেই মানুষ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে। এতে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ানোর বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মিলছে মানুষের। দিন যত গড়াচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে উঠছে। বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে লেনদেন হচ্ছে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু হওয়ার আট বছরের মাথায় এজেন্ট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ (জুলাই পর্যন্ত) হিসেবে দেখা গেছে, দেশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ৯ কোটি ২৬ লাখ। তবে নিবন্ধিত গ্রাহকদের মধ্যে অনেক হিসাবই সক্রিয় নেই। সক্রিয় গ্রাহক রয়েছে ৪ কোটি ২৬ লাখ। এসব গ্রাহক জুলাই মাসে ৩১ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৮০টি লেনদেন করেছে। যার মাধ্যমে ৬৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা এক মাসে এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ লেনদেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএসে লেনদেন কয়েকটি কারণে বেড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর আবার খুলেছে। জুলাই মাসে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটার লেনদেন হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেতন দিচ্ছে। মানুষ ক্রেডিট কার্ডের বিলসহ ব্যাংকিংয়ের অনেক সেবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিচ্ছে। এছাড়া সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ ছিল; যেমন সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আর্থিক অনুদান ও প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপলক্ষ্যে উপহার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সুবিধা ভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

তারা বলছেন, করোনার কারণে মানুষ একে অপরের সঙ্গে ‘কন্ট্রাকলেস ট্রানজেকশন’ বা ডিজিটাল ট্রানজেকশনে যাচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নতুন নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আধিপত্য বজায় রেখেছে ‘বিকাশ’। এমএফএসের মাধ্যমে যত লেনদেন হয় তার অর্ধেকের বেশি লেনদেন হয় বিকাশে। এ বিষয়ে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ইত্তেফাককে বলেন, কোভিডের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর তা ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। মানুষ আর্থিক লেনদেনও করছে। এরপর ঈদ আসার কারণে লেনদেন বেড়েছে। ডিজিটাল আর্থিক সেবাদানকারী সংস্থা ‘নগদ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক ইত্তেফাককে বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি দেশের মানুষ তাদের প্রতিদিনকার কেনাকাটা এবং অন্য যে কোনো লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফরমের ওপর আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভর করছে। গ্রাহকরা এখন স্পর্শহীন লেনদেন বেশি পছন্দ করছে। সে কারণেই এমএফএস-এ লেনদেন অনেক বেড়েছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনেক কাজ করা যাচ্ছে। বাস, ট্রেনের টিকিট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে মানুষের হাতের মুঠোয় থাকা ছোট্ট যন্ত্রটির মাধ্যমে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যেসব কাজ করা যায় সেগুলো হলো, রেমিট্যান্স পাঠানো, ক্যাশ ইন-ক্যাশ আউট, একজনের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যজনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, ইউটিলিটি বিল দেওয়া, মোবাইল ফোনের এয়ার টাইম কেনা, পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট পেমেন্ট, সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতন দেওয়া, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা, বিমা প্রিমিয়াম, ডিপিএস দেওয়া যায়। তবে এতসব সুবিধার পরও মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বেশি চার্জ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের খরচ ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অর্থাত্ গ্রাহকদের ১ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করতে খরচ হয় সাড়ে ১৮ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এ খরচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও ব্যাংকের টাকা পাঠানোর চেয়ে বেশি।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে খরচ বেশি বিষয়ে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ইত্তেফাককে বলেন, দেশের মোবাইল ব্যাংকিং খাত এখনো বিনিয়োগ পর্যায়ে রয়েছে। ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি এ দুটি ছাড়া আর অন্য কোনো সেবা থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না। নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসা ও জনবলের জন্য প্রচুর টাকা খরচ হয়। সে তুলনায় আয় হয় কম। এক্ষেত্রে আয়ের একটা বড় অংশ ৭৫ থেকে ৭৭ শতাংশ এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটরদের দিয়ে দিতে হয়। অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রানজেকশন করলে বাকিটা পায় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। আর মোবাইল অপারেটরদের সাহায্যে ট্রানজেকশন করলে তার মধ্য থেকে ৭ শতাংশ মোবাইল অপারেটরকে দিতে হয়। ফলে সেবাদাতা হিসাবে খুব কম আয় হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সুবিধাবঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরের বছর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। ১৯৯৯ সালে ইউরোপিয়ান ব্যাংকে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। মূলত, স্মার্টফোন উদ্ভাবনের পরে মোবাইল ওয়াপ (ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয়।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা মোবাইল অপারেটর ভিত্তিক হলেও বাংলাদেশে এ সেবা ব্যাংকভিত্তিক। ব্যাংকগুলো বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ সেবা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করলেও এখন সবচেয়ে এগিয়ে আছে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার বিষয়ক রেজুলেশন গৃহীত

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেকর্ড লেনদেন

আপডেট টাইম : 07:32:53 am, Wednesday, 9 September 2020

করোনা মহামারিতে মানুষ যতটা পারছে ঘরে থাকার চেষ্টা করছে। তবে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে মানুষকে টাকা আদান প্রদান করতে হচ্ছে। এখন অনলাইনে কেনাকাটা থেকে শুরু করে, ইউটিলিটি বিল প্রদান, চাকরির বেতন পর্যন্ত সবই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হচ্ছে। আর যখন খুশি টাকা উঠানো, টাকা পাঠানো, মোবাইল ফোনে রিচার্জ করার মতো সুবিধা তো রয়েছেই।

মূলত, ব্যাংকে যাওয়ার ঝামেলা কমাতেই মানুষ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে। এতে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়ানোর বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মিলছে মানুষের। দিন যত গড়াচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তাও তুঙ্গে উঠছে। বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে লেনদেন হচ্ছে ২ হাজার কোটি টাকার ওপরে। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু হওয়ার আট বছরের মাথায় এজেন্ট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ (জুলাই পর্যন্ত) হিসেবে দেখা গেছে, দেশে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ৯ কোটি ২৬ লাখ। তবে নিবন্ধিত গ্রাহকদের মধ্যে অনেক হিসাবই সক্রিয় নেই। সক্রিয় গ্রাহক রয়েছে ৪ কোটি ২৬ লাখ। এসব গ্রাহক জুলাই মাসে ৩১ কোটি ৪ লাখ ৪২ হাজার ৩৮০টি লেনদেন করেছে। যার মাধ্যমে ৬৩ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। যা এক মাসে এ যাবত্কালের সর্বোচ্চ লেনদেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএসে লেনদেন কয়েকটি কারণে বেড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর আবার খুলেছে। জুলাই মাসে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটার লেনদেন হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বেতন দিচ্ছে। মানুষ ক্রেডিট কার্ডের বিলসহ ব্যাংকিংয়ের অনেক সেবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিচ্ছে। এছাড়া সরকারের বেশ কিছু পদক্ষেপ ছিল; যেমন সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আর্থিক অনুদান ও প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপলক্ষ্যে উপহার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সুবিধা ভোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

তারা বলছেন, করোনার কারণে মানুষ একে অপরের সঙ্গে ‘কন্ট্রাকলেস ট্রানজেকশন’ বা ডিজিটাল ট্রানজেকশনে যাচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নতুন নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে আধিপত্য বজায় রেখেছে ‘বিকাশ’। এমএফএসের মাধ্যমে যত লেনদেন হয় তার অর্ধেকের বেশি লেনদেন হয় বিকাশে। এ বিষয়ে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ইত্তেফাককে বলেন, কোভিডের কারণে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর তা ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক হচ্ছে। মানুষ আর্থিক লেনদেনও করছে। এরপর ঈদ আসার কারণে লেনদেন বেড়েছে। ডিজিটাল আর্থিক সেবাদানকারী সংস্থা ‘নগদ’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক ইত্তেফাককে বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি দেশের মানুষ তাদের প্রতিদিনকার কেনাকাটা এবং অন্য যে কোনো লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল আর্থিক প্ল্যাটফরমের ওপর আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভর করছে। গ্রাহকরা এখন স্পর্শহীন লেনদেন বেশি পছন্দ করছে। সে কারণেই এমএফএস-এ লেনদেন অনেক বেড়েছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসেই অনেক কাজ করা যাচ্ছে। বাস, ট্রেনের টিকিট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন পরিশোধ করা যাচ্ছে মানুষের হাতের মুঠোয় থাকা ছোট্ট যন্ত্রটির মাধ্যমে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যেসব কাজ করা যায় সেগুলো হলো, রেমিট্যান্স পাঠানো, ক্যাশ ইন-ক্যাশ আউট, একজনের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্যজনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো, ইউটিলিটি বিল দেওয়া, মোবাইল ফোনের এয়ার টাইম কেনা, পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট পেমেন্ট, সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতন দেওয়া, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ অন্যান্য ভাতা, বিমা প্রিমিয়াম, ডিপিএস দেওয়া যায়। তবে এতসব সুবিধার পরও মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে বেশি চার্জ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের খরচ ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। অর্থাত্ গ্রাহকদের ১ হাজার টাকা ক্যাশ আউট করতে খরচ হয় সাড়ে ১৮ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এ খরচ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় কম হলেও ব্যাংকের টাকা পাঠানোর চেয়ে বেশি।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে খরচ বেশি বিষয়ে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম ইত্তেফাককে বলেন, দেশের মোবাইল ব্যাংকিং খাত এখনো বিনিয়োগ পর্যায়ে রয়েছে। ক্যাশ আউট ও সেন্ড মানি এ দুটি ছাড়া আর অন্য কোনো সেবা থেকে গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না। নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসা ও জনবলের জন্য প্রচুর টাকা খরচ হয়। সে তুলনায় আয় হয় কম। এক্ষেত্রে আয়ের একটা বড় অংশ ৭৫ থেকে ৭৭ শতাংশ এজেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটরদের দিয়ে দিতে হয়। অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রানজেকশন করলে বাকিটা পায় সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। আর মোবাইল অপারেটরদের সাহায্যে ট্রানজেকশন করলে তার মধ্য থেকে ৭ শতাংশ মোবাইল অপারেটরকে দিতে হয়। ফলে সেবাদাতা হিসাবে খুব কম আয় হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, সুবিধাবঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালুর অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরের বছর পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। ১৯৯৯ সালে ইউরোপিয়ান ব্যাংকে সর্বপ্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। মূলত, স্মার্টফোন উদ্ভাবনের পরে মোবাইল ওয়াপ (ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল) পদ্ধতির মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং শুরু হয়।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা মোবাইল অপারেটর ভিত্তিক হলেও বাংলাদেশে এ সেবা ব্যাংকভিত্তিক। ব্যাংকগুলো বিভিন্ন মোবাইল ফোন অপারেটরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এ সেবা দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করলেও এখন সবচেয়ে এগিয়ে আছে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ।