আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দীর্ঘ ১০ মাস ধরে চলছে এই যুদ্ধ। রুশ বাহিনী ইতোমধ্যে ইউক্রেনের বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নিয়েছে। তবে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তায় ওইসব এলাকা উদ্ধারে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন।
এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে সরাসরি অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিচ্ছে আমেরিকা, ব্রিটেনসহ পশ্চিমা দেশগুলো।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিয়েছে আমেরিকা। দেশটি ২৩ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে। এরপরই রয়েছে ব্রিটেন। তারা সহায়তা দিয়েছে ৪.১ বিলিয়ন ইউরো।
এছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানি এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে ২.৩ বিলিয়ন ইউরো সামরিক সহায়তা দিয়েছে বা অঙ্গীকার করেছে।
সামরিক সরঞ্জাম দেয়া ছাড়াও পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনকে মানবিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানুয়ারি মাসে ইউক্রেনকে আরও ১৮ বিলিয়ন ইউরো সামরিক, মানবিক ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ইউক্রেনকে দেওয়া মোট সহায়তার পরিমাণ হবে ৫২ বিলিয়ন ইউরো। আর যুক্তরাষ্ট্রের হবে ৪৮ বিলিয়ন ইউরো।
কিল ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদরা ‘ইউক্রেন সাপোর্ট ট্র্যাকার’ নামে নিয়মিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন।
কিল ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ আন্দ্রে ফ্রাঙ্ক ডয়চে ভেলেকে জানান, ইউক্রেনকে দেওয়া জার্মানির সহায়তার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে কারণ, আইরিস-টি এসএলএম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের জন্য জার্মানি ঠিক কতগুলো মিসাইল দিয়েছে, সেটা সরকার জানায়নি। অথচ এই সিস্টেম ব্যবহার করে ইউক্রেন কিয়েভের আশেপাশে চালানো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ঠেকিয়ে আসছে। একেকটি আইরিস-টি মিসাইলের দাম বিশ্ব বাজারে ছয় লাখ ১৬ হাজার ডলার বলে জানিয়েছেন আন্দ্রে ফাঙ্ক।
এছাড়া আরেকটি বিষয়ও সহায়তার প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করতে অর্থনীতিবিদদের সমস্যায় ফেলছে বলে জানান তিনি। যেমন স্লোভাকিয়া ও স্লোভেনিয়া ইউক্রেনকে সোভিয়েত আমলের ট্যাঙ্ক দিয়েছে। এর বিনিময়ে দেশ দুটি জার্মানি থেকে সামরিক সরঞ্জাম পেয়েছে।
সামরিক সহায়তার মূল্য নির্ধারণ করতে কিল ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদরা নিজেরা বিভিন্ন জিনিসের মূল্য নির্ধারণ করে নিচ্ছেন, যেমন জার্মানি ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ৩০টি গেপার্ড ট্যাঙ্ক দিয়েছে। ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ের এই ট্যাঙ্কগুলো জার্মানি আর ব্যবহার করতো না। ফলে সেই অর্থে এগুলোর বর্তমান কোনও মূল্য নেই। তবে গণনার সুবিধার্থে অর্থনীতিবিদরা এগুলোর মূল্য ঠিক করে নিয়েছেন। তাদের হিসেবে একেকটি গেপার্ড ট্যাঙ্কের দাম ১.২ মিলিয়ন ডলার। এই ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে ইউক্রেন রুশ মিসাইল হামলা থেকে নিজেদের রক্ষার চেষ্টা করছে।