Dhaka , Saturday, 20 April 2024

আশার আলো দেখছে মালয়েশিয়ার রেমিট্যান্স হাউজগুলো

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:33:55 am, Friday, 6 January 2023
  • 43 বার

মালয়েশিয়া ডেস্ক: মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে টাকা পাঠানোয় আশার আলো দেখছে বাংলাদেশি রেমিট্যান্স হাউজগুলো। এরই মধ্যে তারা দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে বৈধপথে অর্থ পাঠানোর কৌশল ও পদ্ধতি তুলে ধরেছেন।

জুলাই/ডিসেম্বর ২০২২, ৬ মাসে মালয়েশিয়া থেকে ৫শ ৪৩ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার, সমপরিমাণ ৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা অর্থ দেশে পাঠিয়েছে।

বিদায়ী বছরের নভেম্বর মাসের চেয়ে ডিসেম্বরে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আশার আলো দেখছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। চার বছর ধরেই টানা বাড়ছিল রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। ২০/২১ অর্থ বছরে রেকর্ড পরিমাণ আয় আসে বাংলাদেশে। তবে বর্তমানে মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স আহরণে ৫ম থেকে ৬ষ্ঠ অবস্থানে নেমে এসেছে যা গত ২০/২১ অর্থ বছরে গড়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের তুলনায় ৪২ শতাংশ কম।

মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে এসেছে ২ হাজার ২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত অর্থ বছরে সে আয় কমে যায়। কারণ হিসেবে অনানুষ্ঠানিক বা হুন্ডিতে অর্থ পাঠাতে প্রতি ডলারে ৫-৬ টাকা বেশি পাওয়ায় তারা সেদিকেই ঝুঁকে পড়ে।

হুন্ডিতে অর্থ পাঠানোর জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় না বরং হুন্ডি ব্যবসায়ী তাদের কাছে যায় এবং দেশে অর্থ পাঠায়। আরেকটি অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থা চালু রয়েছে সেটি হলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের খরচের অর্থ সেখানে কর্মীদের বা করো কাছ থেকে নিয়ে দেশে প্রবাসীর পরিবারকে টাকা দেয় ফলে সে অর্থ বাংলাদেশে প্রবেশ করে না। এতেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যায়। এসব বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্থ প্রবাহ চালু রাখলে রেমিট্যান্স প্রবাহ পজিটিভ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

বৈধপথে অর্থ পাঠালে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং অর্থ তছরূপ হওয়ার ঝুঁকি না থাকায় সচেতন প্রবাসীরা বৈধপথে দেশে অর্থ পাঠানোর নিশ্চিত পথ ধরার প্রবণতা বেড়েছে। রেমিট্যান্স হাউজগুলো আশাবাদী যে এ প্রবণতা ধরে রাখা গেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। তাই তাদের পক্ষে প্রণোদনার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ করা এবং ২.৫ শতাংশ প্রবাসীর নামে প্রভিডেন্ড ফান্ড করার প্রস্তাব করেছে।

তারা বলেছেন, প্রতিটি প্রবাসীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাব নম্বরে অর্থ পাঠানো বাধ্যতামূলক করতে। এজন্য যাদের ব্যাংক হিসাব নেই তারা বাংলাদেশি তিনটি রেমিট্যান্স হাউজে এসে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে বলে আশ্বস্ত করেছে। রেমিট্যান্স হাউজগুলোর পক্ষে ডলার বন্ড ১ কোটি থেকে বৃদ্ধি করে ৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছে ফলে প্রবাসীরা উৎসাহ পাবে।

এছাড়াও রেমিট্যান্স হাউজগুলো নিজস্ব প্রণোদনা দিচ্ছে। নানামুখী প্রচারণা চালাচ্ছে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে। তবে মালয়েশিয়ার দূর-দূরান্তে থাকা প্রবাসীরা বলছেন, দেশীয় রেমিট্যান্স হাউজগুলো তাদের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে।

অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউজের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার ও ডাইরেক্টর সুলতান আহমেদ বলেন, বতর্মানে ডলারের বিনিময় হারের ব্যাপক তারতম্যের কারণে আমরা গ্রাহকদের উপযুক্ত বিনিময় রেট দিতে পারছি না।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়া থেকে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে টাকা পাঠালে সরকার ঘোষিত ২.৫ শতাংশ বোনাস দেওয়া হচ্ছে। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈধপথে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ানোর দিকেই জোর তৎপরতা চলছে এবং প্রবাসীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের মালিকানাধীন অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউস, ন্যাশনাল ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউজ এবং সিটি ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউজ দেশে অর্থ পাঠায়।

এনবিএল রেমিট্যান্স হাউসের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আলী হায়দার মর্তুজা বলেন, এই মুহূর্তে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা বাড়ানো হলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

প্লাসিড মানি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, রেমিট্যান্স খাতে যে বিপর্যয় সেটা কাটিয়ে উঠতে প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। তবে এই মুহূর্তে বৈধ চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা বাড়ানো উচিত। এর পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, প্রণোদনার চেয়েও বেশি টাকা পাওয়া যায় হুন্ডির মাধ্যমে। ভিসা বাণিজ্য অর্থাৎ বাংলাদেশি কর্মী নিয়েজনকারী ব্যক্তিরা মালয়েশিয়ায় থাকা কর্মীদের কাছ থেকে রিঙ্গিত নিয়ে বিনিময়ে প্রবাসীদের পরিবারকে সমপরিমাণ টাকা দেয়। আন্ডার ইন ভয়েসের (প্রকৃত মূল্য কম দেখানো) মতো অবৈধ পথ আবার চালু হয়ে গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হলে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক, শিক্ষার্থীদের ও ব্যবসায়ীদের বৈধ খরচের জন্য দেশ থেকে অর্থ আগমন সুযোগ দিলে বাংলাদেশিরা স্থানীয়ভাবে ডলার ক্রয় বন্ধ করে দিবে এতে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাবে বাংলাদেশ।

কিন্তু সে সুযোগ না থাকায় অবৈধ উপায় অবলম্বন করছে। অন্যদিকে প্রবাসী আয় প্রবাসীর দেশে নিজস্ব ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নাই ফলে যে কোনো উপায়ে অর্থ পাঠাচ্ছে।

মালয়েশিয়া থেকে শুধু তিনটি দেশীয় রেমিট্যান্স হাউজের মাধ্যমে অর্থ পাঠিয়ে থাকে না অন্যান্য এজেন্সি আছে সেগুলোর সাথেও হাইকমিশনের বৈঠক করলে আরো সুফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করেন।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় রেমিট্যান্সের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডিসহ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার পাশাপাশি প্রবাসীদের সচেতনতার ওপর সরকার জোর দিয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধ ও প্রবাসীদের সচেতন করতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে।

আমাদের উদ্দেশ্য শুধু কর্মী নয় নানান পেশার বাংলাদেশি যারা আছেন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা। যেন সবাই যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে পারে।

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বৈধপথে রেমিট্যাস পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার আহ্বান জানান হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।

প্রতিনিয়ত সেবার মান মূল্যায়ন করছি এবং প্রবাসী কল্যাণে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ‘ইজি একসেস টু সার্ভিস অর্থাৎ প্রবাসীর সঙ্গে হাইকমিশনের সহজ যোগাযোগ ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হাইকমিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট হাইকমিশন বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি এসব বাস্তবায়নে প্রবাসীদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আশাবাদী যে প্রবাসীদের সহযোগিতায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে স্মার্ট পদক্ষেপ সুফল দেবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

আশার আলো দেখছে মালয়েশিয়ার রেমিট্যান্স হাউজগুলো

আপডেট টাইম : 08:33:55 am, Friday, 6 January 2023

মালয়েশিয়া ডেস্ক: মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে টাকা পাঠানোয় আশার আলো দেখছে বাংলাদেশি রেমিট্যান্স হাউজগুলো। এরই মধ্যে তারা দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে বৈধপথে অর্থ পাঠানোর কৌশল ও পদ্ধতি তুলে ধরেছেন।

জুলাই/ডিসেম্বর ২০২২, ৬ মাসে মালয়েশিয়া থেকে ৫শ ৪৩ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার, সমপরিমাণ ৫ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা অর্থ দেশে পাঠিয়েছে।

বিদায়ী বছরের নভেম্বর মাসের চেয়ে ডিসেম্বরে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে আশার আলো দেখছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। চার বছর ধরেই টানা বাড়ছিল রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। ২০/২১ অর্থ বছরে রেকর্ড পরিমাণ আয় আসে বাংলাদেশে। তবে বর্তমানে মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স আহরণে ৫ম থেকে ৬ষ্ঠ অবস্থানে নেমে এসেছে যা গত ২০/২১ অর্থ বছরে গড়ে পাঠানো রেমিট্যান্সের তুলনায় ৪২ শতাংশ কম।

মালয়েশিয়া থেকে বৈধপথে ২০২০-২১ অর্থ বছরে দেশে এসেছে ২ হাজার ২ দশমিক ৩৬ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত অর্থ বছরে সে আয় কমে যায়। কারণ হিসেবে অনানুষ্ঠানিক বা হুন্ডিতে অর্থ পাঠাতে প্রতি ডলারে ৫-৬ টাকা বেশি পাওয়ায় তারা সেদিকেই ঝুঁকে পড়ে।

হুন্ডিতে অর্থ পাঠানোর জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যেতে হয় না বরং হুন্ডি ব্যবসায়ী তাদের কাছে যায় এবং দেশে অর্থ পাঠায়। আরেকটি অনানুষ্ঠানিক ব্যবস্থা চালু রয়েছে সেটি হলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের খরচের অর্থ সেখানে কর্মীদের বা করো কাছ থেকে নিয়ে দেশে প্রবাসীর পরিবারকে টাকা দেয় ফলে সে অর্থ বাংলাদেশে প্রবেশ করে না। এতেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যায়। এসব বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্থ প্রবাহ চালু রাখলে রেমিট্যান্স প্রবাহ পজিটিভ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

বৈধপথে অর্থ পাঠালে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং অর্থ তছরূপ হওয়ার ঝুঁকি না থাকায় সচেতন প্রবাসীরা বৈধপথে দেশে অর্থ পাঠানোর নিশ্চিত পথ ধরার প্রবণতা বেড়েছে। রেমিট্যান্স হাউজগুলো আশাবাদী যে এ প্রবণতা ধরে রাখা গেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। তাই তাদের পক্ষে প্রণোদনার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ করা এবং ২.৫ শতাংশ প্রবাসীর নামে প্রভিডেন্ড ফান্ড করার প্রস্তাব করেছে।

তারা বলেছেন, প্রতিটি প্রবাসীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাব নম্বরে অর্থ পাঠানো বাধ্যতামূলক করতে। এজন্য যাদের ব্যাংক হিসাব নেই তারা বাংলাদেশি তিনটি রেমিট্যান্স হাউজে এসে ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে বলে আশ্বস্ত করেছে। রেমিট্যান্স হাউজগুলোর পক্ষে ডলার বন্ড ১ কোটি থেকে বৃদ্ধি করে ৫ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করেছে ফলে প্রবাসীরা উৎসাহ পাবে।

এছাড়াও রেমিট্যান্স হাউজগুলো নিজস্ব প্রণোদনা দিচ্ছে। নানামুখী প্রচারণা চালাচ্ছে প্রবাসীদের আকৃষ্ট করতে। তবে মালয়েশিয়ার দূর-দূরান্তে থাকা প্রবাসীরা বলছেন, দেশীয় রেমিট্যান্স হাউজগুলো তাদের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে।

অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউজের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার ও ডাইরেক্টর সুলতান আহমেদ বলেন, বতর্মানে ডলারের বিনিময় হারের ব্যাপক তারতম্যের কারণে আমরা গ্রাহকদের উপযুক্ত বিনিময় রেট দিতে পারছি না।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য মালয়েশিয়া থেকে অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে টাকা পাঠালে সরকার ঘোষিত ২.৫ শতাংশ বোনাস দেওয়া হচ্ছে। বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বৈধপথে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়ানোর দিকেই জোর তৎপরতা চলছে এবং প্রবাসীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের মালিকানাধীন অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউস, ন্যাশনাল ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউজ এবং সিটি ব্যাংক রেমিট্যান্স হাউজ দেশে অর্থ পাঠায়।

এনবিএল রেমিট্যান্স হাউসের চিফ অ্যাক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আলী হায়দার মর্তুজা বলেন, এই মুহূর্তে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা বাড়ানো হলে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

প্লাসিড মানি এক্সচেঞ্জের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, রেমিট্যান্স খাতে যে বিপর্যয় সেটা কাটিয়ে উঠতে প্রাণান্ত চেষ্টা চলছে। তবে এই মুহূর্তে বৈধ চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ সহায়তা বাড়ানো উচিত। এর পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, প্রণোদনার চেয়েও বেশি টাকা পাওয়া যায় হুন্ডির মাধ্যমে। ভিসা বাণিজ্য অর্থাৎ বাংলাদেশি কর্মী নিয়েজনকারী ব্যক্তিরা মালয়েশিয়ায় থাকা কর্মীদের কাছ থেকে রিঙ্গিত নিয়ে বিনিময়ে প্রবাসীদের পরিবারকে সমপরিমাণ টাকা দেয়। আন্ডার ইন ভয়েসের (প্রকৃত মূল্য কম দেখানো) মতো অবৈধ পথ আবার চালু হয়ে গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হলে বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নাগরিক, শিক্ষার্থীদের ও ব্যবসায়ীদের বৈধ খরচের জন্য দেশ থেকে অর্থ আগমন সুযোগ দিলে বাংলাদেশিরা স্থানীয়ভাবে ডলার ক্রয় বন্ধ করে দিবে এতে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাবে বাংলাদেশ।

কিন্তু সে সুযোগ না থাকায় অবৈধ উপায় অবলম্বন করছে। অন্যদিকে প্রবাসী আয় প্রবাসীর দেশে নিজস্ব ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠানোর কোনো বাধ্যবাধকতা নাই ফলে যে কোনো উপায়ে অর্থ পাঠাচ্ছে।

মালয়েশিয়া থেকে শুধু তিনটি দেশীয় রেমিট্যান্স হাউজের মাধ্যমে অর্থ পাঠিয়ে থাকে না অন্যান্য এজেন্সি আছে সেগুলোর সাথেও হাইকমিশনের বৈঠক করলে আরো সুফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করেন।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় রেমিট্যান্সের প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডিসহ প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার পাশাপাশি প্রবাসীদের সচেতনতার ওপর সরকার জোর দিয়েছে। হুন্ডি প্রতিরোধ ও প্রবাসীদের সচেতন করতে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে।

আমাদের উদ্দেশ্য শুধু কর্মী নয় নানান পেশার বাংলাদেশি যারা আছেন সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করা। যেন সবাই যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে পারে।

মালয়েশিয়া প্রবাসীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বৈধপথে রেমিট্যাস পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার আহ্বান জানান হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার।

প্রতিনিয়ত সেবার মান মূল্যায়ন করছি এবং প্রবাসী কল্যাণে নতুন নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ‘ইজি একসেস টু সার্ভিস অর্থাৎ প্রবাসীর সঙ্গে হাইকমিশনের সহজ যোগাযোগ ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হাইকমিশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট হাইকমিশন বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছি এসব বাস্তবায়নে প্রবাসীদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আশাবাদী যে প্রবাসীদের সহযোগিতায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করতে স্মার্ট পদক্ষেপ সুফল দেবে।