Dhaka , Thursday, 28 March 2024

চট্টগ্রামকে উড়িয়ে সিলেটে হাসি ফেরালেন শান্ত, মুশফিকরা

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:02:50 am, Sunday, 29 January 2023
  • 46 বার

স্পোর্টস ডেস্ক: মৃত্যুঞ্জয়ের শর্ট বল আলতো পাঞ্চে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন জাকির হাসান। বল সীমানা অতিক্রম করার আগেই জেগে উঠে গোটা সিলেট!

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেওয়া ১৭৫ রানের টার্গেটে জয় নিশ্চিত করতে তখন দরকার ছিল কেবল ২ রান। জাকিরের চারে ভরা গ্যালারি পেয়ে যায় ৭ উইকেটে জয়ের আনন্দ। স্বাগতিক দর্শকদের সামনে সিলেটের প্রথম জয়। তাই আনন্দ হয়েছে বাঁধনহারা। ডিজে যখন অফিসিয়াল থিম সং ‘বুচ্ছ নিবা ভাই’ বাজাচ্ছিলেন তখন স্টেডিয়াম জুড়ে একটাই শব্দ,‘সিলেট, সিলেট, সিলেট।’

৭ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে মাশরাফিরা পা রেখেছিল সিলেটে। তাদেরকে ঘিরে উৎসব হবে, উন্মাদনার সৃষ্টি হবে তা আগেই জানা ছিল। তাইতো প্রথম ম্যাচে গ্যালারিতে ছিল গোলাপি উৎসব। ফুল হাউজ গ্যালারিতে ছিল কেবল স্বাগতিক দলের দর্শক। কিন্তু রংপুরের কাছে ম্যাচটি হেরে দর্শকদের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারেননি শান্ত, হৃদয়, জাকিরা। আজ ব্যাট-বলের দারুণ ক্রিকেটে চট্টগ্রামকে উড়িয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। চট্টগ্রামের দেওয়া লক্ষ্য ছুঁয়েছে ১২ বল আগে, ৭ উইকেট হাতে রেখে।

লক্ষ্য তাড়ায় শান্তর ব্যাট জ্বলে উঠে আরেকবার। বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে, শান্তর ব্যাট হাসলেই হাসে সিলেট। ৪৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ রান করেছেন চোখের পলকে। এই ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে এবারের আসরে নিজের রান ৩৫০ এ নিয়ে গেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

সিলেটের জয়ে ফেরার দিনে রানে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিমও। আগের দুই ম্যাচে দুটি গোল্ডেন ডাক পাওয়া মুশফিক ২৬ বলে করেছেন ৪১ রান। পেসার রানা বলে পুল করে যে ছক্কাটি গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন তাতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রান পেতে কতটা মরিয়ে ছিলেন। শেষ দিকে সিলেটের জয়ের কাজ সহজ করেছেন রায়ান বার্ল। প্রথমবার খেলতে নেমেই ১৬ বলে ৪১ রান করেছেন ৪ চার ও ৩ ছক্কায়। আগের দিন, মাত্র ৯২ রানে অলআউট হয়ে যন্ত্রণায় পুড়ছিল সিলেট। আজ ১৮ ওভারে ১৭৭ রান তুলে হাসি ফুটেছে দলের ডাগ আউটে।

এর আগে, টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে চট্টগ্রামের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। শততম বিপিএলের ম্যাচ খেলতে নামা মাশরাফি নিজের প্রথম বলে পেয়ে যান সাফল্য। উসমান খান তার লেন্থ বল ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দেন। সেখানে দারুণ ক্যাচ নেন জাকির। দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী মারুফ। ইনিংসের অর্ধেকতম ওভারে দলের রান ৮৫। যা আগে ব্যাটিং করতে নেমে চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।

মেহেদী মারুফ দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি চার ও ছক্কায় এগিয়ে যান। ষষ্ঠ ওভারে পেসার সাকিবকে পরপর তিনটি চার মারেন চোখের পলকে। দশম ওভারে আবার এই পেসারকে একটি ছক্কা ও চার মারেন পরপর দুই বলে। ওই ওভারের শেষ বলে আফিফ কাভার ড্রাইভে যে চারটি মেরেছিলেন তা নিশ্চিতভাবেই দিনের সেরা শট হয়ে থাকবে।

১০ ওভার শেষে চট্টগ্রাম ভালো অবস্থায় ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় অর্ধের শুরুতেই তাদের তালগোল পাকানো ব্যাটিং। ৮৮ থেকে ৯৭ রানে যেতে আফিফ (৩৪), মেহেদী (৫২), ম‌্যাক্স ও’ডউড (১) ও কাম্পার (৪) আউট হন। ৪০ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ করে ইমাদ ওয়াসিমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মেহেদী।

চট্টগ্রামের ওই অবস্থায় দেড়শ রানও লাগছিল দূরের পথ। কিন্তু শুভাগত হোম দলকে উদ্ধার করেন। পেরেরাকে চার, ছক্কা, ছক্কা উড়িয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন। এরপর মাশরাফির এক ওভারে হাঁকান দুটি চার। শেষ ওভারে সাকিবকে ছক্কা উড়িয়ে ২৬ বলে তুলে নেন লিগের দ্বিতীয় ফিফটি। ২৯ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় তার ৫৪ রানের ইনিংসে চট্টগ্রামের রান ১৭৪ রানে যায়। ষষ্ঠ উইকেটে তাকে সঙ্গ দিয়ে ১২ বলে ১৫ রান করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। বল হাতে সিলেটের সেরা ইমাদ ওয়াসিম। ২৩ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি ও আমির।

নবম ম্যাচে এটি সিলেটের সপ্তম জয়। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আবার তারা শীর্ষে পৌঁছেছে। ১ ম্যাচ কম খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সাকিবের বরিশাল। চট্টগ্রামের এটি নবম ম্যাচে সপ্তম হার। সেরা চারে তাদের যাওয়ার আর সুযোগ নেই বললেই চলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামকে উড়িয়ে সিলেটে হাসি ফেরালেন শান্ত, মুশফিকরা

আপডেট টাইম : 08:02:50 am, Sunday, 29 January 2023

স্পোর্টস ডেস্ক: মৃত্যুঞ্জয়ের শর্ট বল আলতো পাঞ্চে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন জাকির হাসান। বল সীমানা অতিক্রম করার আগেই জেগে উঠে গোটা সিলেট!

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেওয়া ১৭৫ রানের টার্গেটে জয় নিশ্চিত করতে তখন দরকার ছিল কেবল ২ রান। জাকিরের চারে ভরা গ্যালারি পেয়ে যায় ৭ উইকেটে জয়ের আনন্দ। স্বাগতিক দর্শকদের সামনে সিলেটের প্রথম জয়। তাই আনন্দ হয়েছে বাঁধনহারা। ডিজে যখন অফিসিয়াল থিম সং ‘বুচ্ছ নিবা ভাই’ বাজাচ্ছিলেন তখন স্টেডিয়াম জুড়ে একটাই শব্দ,‘সিলেট, সিলেট, সিলেট।’

৭ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে মাশরাফিরা পা রেখেছিল সিলেটে। তাদেরকে ঘিরে উৎসব হবে, উন্মাদনার সৃষ্টি হবে তা আগেই জানা ছিল। তাইতো প্রথম ম্যাচে গ্যালারিতে ছিল গোলাপি উৎসব। ফুল হাউজ গ্যালারিতে ছিল কেবল স্বাগতিক দলের দর্শক। কিন্তু রংপুরের কাছে ম্যাচটি হেরে দর্শকদের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে পারেননি শান্ত, হৃদয়, জাকিরা। আজ ব্যাট-বলের দারুণ ক্রিকেটে চট্টগ্রামকে উড়িয়ে সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। চট্টগ্রামের দেওয়া লক্ষ্য ছুঁয়েছে ১২ বল আগে, ৭ উইকেট হাতে রেখে।

লক্ষ্য তাড়ায় শান্তর ব্যাট জ্বলে উঠে আরেকবার। বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে, শান্তর ব্যাট হাসলেই হাসে সিলেট। ৪৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ রান করেছেন চোখের পলকে। এই ইনিংস খেলার মধ্য দিয়ে এবারের আসরে নিজের রান ৩৫০ এ নিয়ে গেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

সিলেটের জয়ে ফেরার দিনে রানে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিমও। আগের দুই ম্যাচে দুটি গোল্ডেন ডাক পাওয়া মুশফিক ২৬ বলে করেছেন ৪১ রান। পেসার রানা বলে পুল করে যে ছক্কাটি গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন তাতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রান পেতে কতটা মরিয়ে ছিলেন। শেষ দিকে সিলেটের জয়ের কাজ সহজ করেছেন রায়ান বার্ল। প্রথমবার খেলতে নেমেই ১৬ বলে ৪১ রান করেছেন ৪ চার ও ৩ ছক্কায়। আগের দিন, মাত্র ৯২ রানে অলআউট হয়ে যন্ত্রণায় পুড়ছিল সিলেট। আজ ১৮ ওভারে ১৭৭ রান তুলে হাসি ফুটেছে দলের ডাগ আউটে।

এর আগে, টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে চট্টগ্রামের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। শততম বিপিএলের ম্যাচ খেলতে নামা মাশরাফি নিজের প্রথম বলে পেয়ে যান সাফল্য। উসমান খান তার লেন্থ বল ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দেন। সেখানে দারুণ ক্যাচ নেন জাকির। দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী মারুফ। ইনিংসের অর্ধেকতম ওভারে দলের রান ৮৫। যা আগে ব্যাটিং করতে নেমে চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।

মেহেদী মারুফ দৃষ্টিনন্দন কয়েকটি চার ও ছক্কায় এগিয়ে যান। ষষ্ঠ ওভারে পেসার সাকিবকে পরপর তিনটি চার মারেন চোখের পলকে। দশম ওভারে আবার এই পেসারকে একটি ছক্কা ও চার মারেন পরপর দুই বলে। ওই ওভারের শেষ বলে আফিফ কাভার ড্রাইভে যে চারটি মেরেছিলেন তা নিশ্চিতভাবেই দিনের সেরা শট হয়ে থাকবে।

১০ ওভার শেষে চট্টগ্রাম ভালো অবস্থায় ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় অর্ধের শুরুতেই তাদের তালগোল পাকানো ব্যাটিং। ৮৮ থেকে ৯৭ রানে যেতে আফিফ (৩৪), মেহেদী (৫২), ম‌্যাক্স ও’ডউড (১) ও কাম্পার (৪) আউট হন। ৪০ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫২ করে ইমাদ ওয়াসিমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মেহেদী।

চট্টগ্রামের ওই অবস্থায় দেড়শ রানও লাগছিল দূরের পথ। কিন্তু শুভাগত হোম দলকে উদ্ধার করেন। পেরেরাকে চার, ছক্কা, ছক্কা উড়িয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন। এরপর মাশরাফির এক ওভারে হাঁকান দুটি চার। শেষ ওভারে সাকিবকে ছক্কা উড়িয়ে ২৬ বলে তুলে নেন লিগের দ্বিতীয় ফিফটি। ২৯ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় তার ৫৪ রানের ইনিংসে চট্টগ্রামের রান ১৭৪ রানে যায়। ষষ্ঠ উইকেটে তাকে সঙ্গ দিয়ে ১২ বলে ১৫ রান করেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। বল হাতে সিলেটের সেরা ইমাদ ওয়াসিম। ২৩ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি ও আমির।

নবম ম্যাচে এটি সিলেটের সপ্তম জয়। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আবার তারা শীর্ষে পৌঁছেছে। ১ ম্যাচ কম খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সাকিবের বরিশাল। চট্টগ্রামের এটি নবম ম্যাচে সপ্তম হার। সেরা চারে তাদের যাওয়ার আর সুযোগ নেই বললেই চলে।