Dhaka , Monday, 5 June 2023

৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:18:04 am, Wednesday, 1 March 2023
  • 15 বার

নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, ঢাকা শহরের মাত্র ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিবছর ঢাকার ড্যাপভুক্ত (ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান) এলাকায় ৯৫ হাজার ইমারত তৈরি হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার অনুমোদিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি প্রশমন ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাইম মো. শহিদউল্লাহসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। বক্তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় বাড়ানো, ভবন নির্মাণ নীতিমালা অনুসরণ এবং বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।

সভায় রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (অব.) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজউক থেকে সম্প্রতি ঢাকার ভবনগুলোর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। নমুনা হিসাবে ২৫২টি ভবন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ২০০ ভবনই হয় ভেঙে ফেলতে হবে নতুবা রেক্ট্রিফাইয়িং (সংস্কার) করতে হবে। এ হিসাবে ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, ৮.৩ থেকে ৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে সবাইকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সব বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত আছেন। সরকার ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন পরিস্থিতে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট কেনায় ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও একশ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠান শেষে বলেন, সাধারণ সাত মাত্রার ভূমিকম্পকে সামনে রেখে ভবনের সহনমাত্রা নিরূপণ করা হয়। সেই হিসাবে রাজউকের সমীক্ষা অনুযায়ী ৭৯ শতাংশ ভবন অতি, মাঝারি বা কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তুরস্কের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে জনগণের জানমাল রক্ষায় এখনই সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : 08:18:04 am, Wednesday, 1 March 2023

নিউজ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেছেন, ঢাকা শহরের মাত্র ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিবছর ঢাকার ড্যাপভুক্ত (ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান) এলাকায় ৯৫ হাজার ইমারত তৈরি হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার অনুমোদিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সায়েন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভূমিকম্প ঝুঁকি প্রশমন ও প্রস্তুতি’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নাইম মো. শহিদউল্লাহসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। বক্তারা ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের জন্য ঢাকা শহরে উন্মুক্ত স্থান, জলাশয় বাড়ানো, ভবন নির্মাণ নীতিমালা অনুসরণ এবং বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।

সভায় রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) মেজর (অব.) প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী বলেন, রাজউক থেকে সম্প্রতি ঢাকার ভবনগুলোর ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। নমুনা হিসাবে ২৫২টি ভবন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ২০০ ভবনই হয় ভেঙে ফেলতে হবে নতুবা রেক্ট্রিফাইয়িং (সংস্কার) করতে হবে। এ হিসাবে ২১ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প সহনীয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ তুলে ধরে বলেন, ৮.৩ থেকে ৮.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রশমনে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে সবাইকে স্ব স্ব অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসসহ সব বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত আছেন। সরকার ভূমিকম্পসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন পরিস্থিতে উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট কেনায় ২০০ কোটি টাকা দিয়েছে। আরও একশ কোটি টাকা দেওয়া হবে।

উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাকসুদ কামাল অনুষ্ঠান শেষে বলেন, সাধারণ সাত মাত্রার ভূমিকম্পকে সামনে রেখে ভবনের সহনমাত্রা নিরূপণ করা হয়। সেই হিসাবে রাজউকের সমীক্ষা অনুযায়ী ৭৯ শতাংশ ভবন অতি, মাঝারি বা কম ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তুরস্কের ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে জনগণের জানমাল রক্ষায় এখনই সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।