Dhaka , Thursday, 30 November 2023
শিরোনাম :
চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ মেক্সিকো সিটিতে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী রাস্তা প্রশস্ত করতে ইরাকে ভাঙা হল তিনশ’ বছরের পুরনো মিনার, চারিদিকে নিন্দা অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে তিউনিসিয়া-ইইউ সমঝোতা শস্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, ইউক্রেন ছাড়ল শেষ শস্যবাহী জাহাজ ফ্রাঙ্কফুর্টে সান বাঁধানো লেকের ধারে জমে উঠেছিল প্রবাসীদের ঈদ উৎসব দশ মাস পর আবারও রাস্তায় ইরানের বিতর্কিত ‘নীতি পুলিশ’ বার্সেলোনায় ঐতিহ্যবাহী ‘বাংলার মেলা’ মার্কিন গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করলেই ইউক্রেনের ‘সর্বনাশ’, পুতিনের হুঁশিয়ারি ফ্রাঙ্কফুর্টে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের কনস্যুলার সেবা প্রদান কর্মসূচি পালিত

ঢাকা-মেক্সিকো সিটির হৃদয় নেপথ্য

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 11:34:36 am, Saturday, 4 March 2023
  • 22 বার

প্রবাস ডেস্ক: ফুটবল কূটনৈতিক দুনিয়ার নতুন প্রসব ঢাকার আর্জেন্টিনা দূতাবাস। গল্প হলো এই সেদিনও বাংলাদেশের মানুষকে আর্জেন্টিনার ভিসার জন্য আগে ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিতে হতো দিল্লির উদ্দেশ্যে। এখন সে দিনের অবসান। জল্পনা-কল্পনা সব ধুয়ে মুছে পরিশেষে সেই সমস্যার সমাধান হলো। ঢাকায় আবার বর্ণিল আয়োজনে চালু হলো আর্জেন্টিনার দূতাবাস।

আর এই দূতাবাস খোলার পেছনের মূল প্যারামিটার ছিল ফুটবল ডিপ্লোম্যাসি। সে ডিপ্লোম্যাসির দক্ষ কূটনীতিক ছিলেন ১৭ কোটি জনগণ। অসাধারণ এই গল্পের মতো আরেকটি গল্প শিগগিরই হচ্ছে ঢাকায়। বলা যায় লাতিন আমেরিকার চোখ যেন এখন ঢাকায়। লাতিন আমেরিকার আরেকটি দেশ খুলছে তাদের দূতাবাস। দেশটির নাম মেক্সিকো, আর্জেন্টিনার মতো তাদের বাংলাদেশে নেই কোনো দূতাবাস। মেক্সিকোর ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের মানুষকে ছুটতে হই নয়াদিল্লিতে। এটিরও অবসান হচ্ছে দ্রুত।

এই দূতাবাস খোলার পেছনে রয়েছে অন্য এক গল্প। সরকারের প্রাণখোলা সদিচ্ছা দক্ষ কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা সঙ্গে একজন সফল রাষ্ট্রদূতের অহর্নিশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। শুক্রবার বাংলাদেশে দূতাবাস খোলার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে মেক্সিকোর গণমাধ্যম। পত্রিকাটিতে নয়াদিল্লিতে মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন।

বৈঠকে মেক্সিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এব্রার্ড চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে একটি মেক্সিকান দূতাবাস খোলার ঘোষণা দেন। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।

মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় জায়ান্ট শক্তি। মেক্সিকো বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী, বিশেষ করে ওষুধ, কৃষি ব্যবসা এবং প্রযুক্তি খাতে।

সূত্র জানায়, ১৯৭৫ সালের ৮ জুলাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের চার বছরের মাথায় এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপিত হয়। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কানকুনে অনুষ্ঠিত নর্থ-সাউথ সামিটে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে মেক্সিকো সফর করেন। লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ মেক্সিকোর সঙ্গে দিন দিন আমাদের সম্পর্ক দিন দিন আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। বাড়ছে ব্যবসা বাণিজ্য আমাদের পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বাজারগুলোর মধ্যে একটি মেক্সিকো।

তবে পোশাক শিল্প ছাড়াও কৃষিজ দ্রব্য, চামড়া, প্লাস্টিক, সিরামিক, পাট, আইসিটি, বিদ্যুৎ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা প্রকৌশল, যানবাহনের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ স্বাস্থ্যসেবা ও কৃষিভিত্তিক শিল্পে উভয় দেশের একসঙ্গে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ভারতের নয়া দিল্লিতে অবস্থিত মেক্সিকো দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ফেডেরিকো সালাস লৎফে। কিছুদিন পূর্বে এক সেমিনারে জানান উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণের গুরুত্বের কথা।

মেক্সিকোর দূত বলেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মেক্সিকো অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, কেমিক্যাল, ফিনটেক প্রভৃতি খাতে বড় সম্ভাবনা দেখছে মেক্সিকো। বৈশ্বিক অটোমোবাইল বাজারের অন্যতম জোগানদাতা হলো মেক্সিকো। অটোমোবাইল শিল্পে মেক্সিকোর অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিময়ে আগ্রহের কথা জানান তিনি।

সাক্ষাৎকারে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেছেন, মেক্সিকান ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে আইসিটি, তৈরি পোশাক, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, আসবাবপত্র, আলোক-সজ্জায় ব্যবহৃত আলো ও ডায়পার পণ্য আমদানিতে আগ্রহী। তারা সামুদ্রিক লবণ ক্রেতা ও বাংলাদেশের সুপার মার্কেট কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও যুক্ত হতে চায়। তারা বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য, অটো পার্টস, তেল ও তেলের ডেরিভেটিভস রফতানির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

উদার গণতন্ত্র ও বাজার অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ-মেক্সিকোর মধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক মিল রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা- এসব ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান লাভ করতে পারি। বিগত আট বছরে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা অগ্রগতি হলেও ভৌগলিক দূরত্ব ও ভাষার প্রতিবন্ধকতার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো এখনো পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হতে পারেনি।

তবে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তৃত করার অনেক সুযোগ রয়েছে। মেক্সিকো সিটির বাংলাদেশ দূতাবাস এই কাজে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্ব বিবেচনায় লাতিন আমেরিকার দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহ।

প্রাসঙ্গিকভাবে ঢাকায় মেক্সিকোর দূতাবাস খোলার পেছনের নেপথ্য বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জানান, মেক্সিকো সিটিতে ২০১২ সালে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতিষ্ঠার পর থেকে, আমার আগের সব রাষ্ট্রদূত ঢাকায় দূতাবাস স্থাপনের জন্য বারংবার মেক্সিকো সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে অবশেষে এতদিন পরে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো। এতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা এবং অন্যান্য কনস্যুলার সংক্রান্ত জটিলতারই সমাধান হবে তাই নয়, একই সাথে কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, সংস্কৃতি, উভয় দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে যা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ

ঢাকা-মেক্সিকো সিটির হৃদয় নেপথ্য

আপডেট টাইম : 11:34:36 am, Saturday, 4 March 2023

প্রবাস ডেস্ক: ফুটবল কূটনৈতিক দুনিয়ার নতুন প্রসব ঢাকার আর্জেন্টিনা দূতাবাস। গল্প হলো এই সেদিনও বাংলাদেশের মানুষকে আর্জেন্টিনার ভিসার জন্য আগে ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিতে হতো দিল্লির উদ্দেশ্যে। এখন সে দিনের অবসান। জল্পনা-কল্পনা সব ধুয়ে মুছে পরিশেষে সেই সমস্যার সমাধান হলো। ঢাকায় আবার বর্ণিল আয়োজনে চালু হলো আর্জেন্টিনার দূতাবাস।

আর এই দূতাবাস খোলার পেছনের মূল প্যারামিটার ছিল ফুটবল ডিপ্লোম্যাসি। সে ডিপ্লোম্যাসির দক্ষ কূটনীতিক ছিলেন ১৭ কোটি জনগণ। অসাধারণ এই গল্পের মতো আরেকটি গল্প শিগগিরই হচ্ছে ঢাকায়। বলা যায় লাতিন আমেরিকার চোখ যেন এখন ঢাকায়। লাতিন আমেরিকার আরেকটি দেশ খুলছে তাদের দূতাবাস। দেশটির নাম মেক্সিকো, আর্জেন্টিনার মতো তাদের বাংলাদেশে নেই কোনো দূতাবাস। মেক্সিকোর ভিসার জন্য বাংলাদেশিদের মানুষকে ছুটতে হই নয়াদিল্লিতে। এটিরও অবসান হচ্ছে দ্রুত।

এই দূতাবাস খোলার পেছনে রয়েছে অন্য এক গল্প। সরকারের প্রাণখোলা সদিচ্ছা দক্ষ কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা সঙ্গে একজন সফল রাষ্ট্রদূতের অহর্নিশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। শুক্রবার বাংলাদেশে দূতাবাস খোলার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে মেক্সিকোর গণমাধ্যম। পত্রিকাটিতে নয়াদিল্লিতে মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো এব্রার্ড ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সাক্ষাতের কথা উল্লেখ করেন।

বৈঠকে মেক্সিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এব্রার্ড চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশে একটি মেক্সিকান দূতাবাস খোলার ঘোষণা দেন। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করার সময় তিনি এ ঘোষণা দেন।

মেক্সিকোর পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ১৭ কোটির বেশি জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় জায়ান্ট শক্তি। মেক্সিকো বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী, বিশেষ করে ওষুধ, কৃষি ব্যবসা এবং প্রযুক্তি খাতে।

সূত্র জানায়, ১৯৭৫ সালের ৮ জুলাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের চার বছরের মাথায় এ দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপিত হয়। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কানকুনে অনুষ্ঠিত নর্থ-সাউথ সামিটে অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে মেক্সিকো সফর করেন। লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ মেক্সিকোর সঙ্গে দিন দিন আমাদের সম্পর্ক দিন দিন আরও সুদৃঢ় হচ্ছে। বাড়ছে ব্যবসা বাণিজ্য আমাদের পোশাক শিল্পের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বাজারগুলোর মধ্যে একটি মেক্সিকো।

তবে পোশাক শিল্প ছাড়াও কৃষিজ দ্রব্য, চামড়া, প্লাস্টিক, সিরামিক, পাট, আইসিটি, বিদ্যুৎ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা প্রকৌশল, যানবাহনের যন্ত্রাংশ, চিকিৎসা সরঞ্জামসহ স্বাস্থ্যসেবা ও কৃষিভিত্তিক শিল্পে উভয় দেশের একসঙ্গে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ভারতের নয়া দিল্লিতে অবস্থিত মেক্সিকো দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ফেডেরিকো সালাস লৎফে। কিছুদিন পূর্বে এক সেমিনারে জানান উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণের গুরুত্বের কথা।

মেক্সিকোর দূত বলেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বৈচিত্র্যকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মেক্সিকো অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যাল, কেমিক্যাল, ফিনটেক প্রভৃতি খাতে বড় সম্ভাবনা দেখছে মেক্সিকো। বৈশ্বিক অটোমোবাইল বাজারের অন্যতম জোগানদাতা হলো মেক্সিকো। অটোমোবাইল শিল্পে মেক্সিকোর অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে বিনিময়ে আগ্রহের কথা জানান তিনি।

সাক্ষাৎকারে মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম বলেছেন, মেক্সিকান ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে আইসিটি, তৈরি পোশাক, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাবার, আসবাবপত্র, আলোক-সজ্জায় ব্যবহৃত আলো ও ডায়পার পণ্য আমদানিতে আগ্রহী। তারা সামুদ্রিক লবণ ক্রেতা ও বাংলাদেশের সুপার মার্কেট কোম্পানিগুলোর সঙ্গেও যুক্ত হতে চায়। তারা বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য, অটো পার্টস, তেল ও তেলের ডেরিভেটিভস রফতানির ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

উদার গণতন্ত্র ও বাজার অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ-মেক্সিকোর মধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও অর্জনের ক্ষেত্রে অনেক মিল রয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন, জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা- এসব ক্ষেত্রে আমরা একে অপরের অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান লাভ করতে পারি। বিগত আট বছরে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা অগ্রগতি হলেও ভৌগলিক দূরত্ব ও ভাষার প্রতিবন্ধকতার কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলো এখনো পূর্ণ মাত্রায় বিকশিত হতে পারেনি।

তবে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্র বিস্তৃত করার অনেক সুযোগ রয়েছে। মেক্সিকো সিটির বাংলাদেশ দূতাবাস এই কাজে নিয়োজিত। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্ব বিবেচনায় লাতিন আমেরিকার দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ও কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহ।

প্রাসঙ্গিকভাবে ঢাকায় মেক্সিকোর দূতাবাস খোলার পেছনের নেপথ্য বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম জানান, মেক্সিকো সিটিতে ২০১২ সালে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রতিষ্ঠার পর থেকে, আমার আগের সব রাষ্ট্রদূত ঢাকায় দূতাবাস স্থাপনের জন্য বারংবার মেক্সিকো সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে অবশেষে এতদিন পরে এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো। এতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা এবং অন্যান্য কনস্যুলার সংক্রান্ত জটিলতারই সমাধান হবে তাই নয়, একই সাথে কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, উচ্চশিক্ষা, সংস্কৃতি, উভয় দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে যা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে।