Dhaka , Wednesday, 7 June 2023

জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়নে বাংলাদেশ সফরে আসছে আইএমএফ মিশন

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 10:28:48 am, Sunday, 5 March 2023
  • 19 বার

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের আর্থিক খাতে জলবায়ু-সম্পর্কিত ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আসবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তারা বলেছে, আইএমএফের মনেটারি অ্যান্ড ক্যাপিটাল মার্কেট (এমসিএম) ডিপার্টমেন্ট ৫-৯ মার্চ বাংলাদেশে একটি মিশন প্রস্তাব করছে।

আইএমএফের এমসিএম বিভাগের অর্থনীতিবিদ এজেন্স ক্যারেলার নেতৃত্বে এই মিশনটি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ভৌত জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে সাহায্য করবে। এরমধ্যে রয়েছে, আর্থিক ও জলবায়ু তথ্য শনাক্তকরণ এবং একটি ঝুঁকি মূল্যায়ন কাঠামো ডিজাইন করা যা ব্যাংকিং খাতে বন্যার মতো দুর্যোগের প্রভাবের ওপর গুরুত্ব দেবে।

চলমান ডলার সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে তার মধ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর আওতায় দেওয়া হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশই প্রথম এশিয়ান দেশ যারা এই তহবিল থেকে ঋণ পাচ্ছে।

কৃষি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানিসম্পদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ- এসব মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে যেসব জলবায়ু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তাদের এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সহযোগিতা ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করবে মিশনটি।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, আরএসএফ তহবিল পেতে সরকারকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেজন্য আগামী বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলাদা বাজেট বই বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আইএমএফ বলছে, আর্থিক খাতের জন্য জলবায়ু ঝুঁকির মূল্যায়নও আরএসএফ ব্যবস্থার অধীনে একটি মূল সংস্কার হিসেবেই বিবেচিত।

বর্তমানে জলবায়ু-সম্পর্কিত বার্ষিক সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ জিডিপির ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু আগামী ১৫ বছরে এই খাতে ব্যয় ৩ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ এ উন্নীত করতে হবে বিধায়, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বেশ বড় অর্থায়ন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে আইএমএফ।

তারা আরও বলেছে, জলবায়ু অর্থায়নে কোনো ব্যবধান থাকলে এসডিজি অর্থায়নের মতোই এক্ষেত্রে ব্যয় নির্বাহ না করে সেই ব্যবধান পূরণ করা হবে।

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এবং ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যানে চিহ্নিত অগ্রাধিকারগুলোর অর্থায়নে সাহায্য করার জন্য আর্থিক পরিসরকে আরও প্রসারিত করবে আরএসএফ।

জলবায়ু-সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য নতুন বাজেট সহায়তা কর্মসূচির কথাও বিবেচনা করছে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে পাবলিক গ্রিন বন্ড এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার অধীনে প্রাইভেট গ্রিন ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৮ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়নে বাংলাদেশ সফরে আসছে আইএমএফ মিশন

আপডেট টাইম : 10:28:48 am, Sunday, 5 March 2023

নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের আর্থিক খাতে জলবায়ু-সম্পর্কিত ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আসবে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে তারা বলেছে, আইএমএফের মনেটারি অ্যান্ড ক্যাপিটাল মার্কেট (এমসিএম) ডিপার্টমেন্ট ৫-৯ মার্চ বাংলাদেশে একটি মিশন প্রস্তাব করছে।

আইএমএফের এমসিএম বিভাগের অর্থনীতিবিদ এজেন্স ক্যারেলার নেতৃত্বে এই মিশনটি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে ভৌত জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে সাহায্য করবে। এরমধ্যে রয়েছে, আর্থিক ও জলবায়ু তথ্য শনাক্তকরণ এবং একটি ঝুঁকি মূল্যায়ন কাঠামো ডিজাইন করা যা ব্যাংকিং খাতে বন্যার মতো দুর্যোগের প্রভাবের ওপর গুরুত্ব দেবে।

চলমান ডলার সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছে তার মধ্যে ১.৪ বিলিয়ন ডলার রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) এর আওতায় দেওয়া হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশই প্রথম এশিয়ান দেশ যারা এই তহবিল থেকে ঋণ পাচ্ছে।

কৃষি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, পানিসম্পদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ- এসব মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোতে যেসব জলবায়ু বিশেষজ্ঞ রয়েছেন তাদের এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সহযোগিতা ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করবে মিশনটি।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে, আরএসএফ তহবিল পেতে সরকারকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সেজন্য আগামী বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলাদা বাজেট বই বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আইএমএফ বলছে, আর্থিক খাতের জন্য জলবায়ু ঝুঁকির মূল্যায়নও আরএসএফ ব্যবস্থার অধীনে একটি মূল সংস্কার হিসেবেই বিবেচিত।

বর্তমানে জলবায়ু-সম্পর্কিত বার্ষিক সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ জিডিপির ১ শতাংশেরও কম। কিন্তু আগামী ১৫ বছরে এই খাতে ব্যয় ৩ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ এ উন্নীত করতে হবে বিধায়, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের বেশ বড় অর্থায়ন প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে আইএমএফ।

তারা আরও বলেছে, জলবায়ু অর্থায়নে কোনো ব্যবধান থাকলে এসডিজি অর্থায়নের মতোই এক্ষেত্রে ব্যয় নির্বাহ না করে সেই ব্যবধান পূরণ করা হবে।

বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এবং ন্যাশনাল অ্যাডাপ্টেশন প্ল্যানে চিহ্নিত অগ্রাধিকারগুলোর অর্থায়নে সাহায্য করার জন্য আর্থিক পরিসরকে আরও প্রসারিত করবে আরএসএফ।

জলবায়ু-সম্পর্কিত বিভিন্ন সংস্কার বাস্তবায়নে সহায়তার জন্য নতুন বাজেট সহায়তা কর্মসূচির কথাও বিবেচনা করছে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে পাবলিক গ্রিন বন্ড এবং মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনার অধীনে প্রাইভেট গ্রিন ফাইন্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত ৮ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করার পরিকল্পনা করেছে।