Dhaka , Thursday, 28 March 2024

মালয়েশিয়া-বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 11:19:18 am, Friday, 24 March 2023
  • 44 বার

মালয়েশিয়া ডেস্ক: ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া। অকৃত্রিম বন্ধু দুই দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি প্রায় অভিন্ন থাকলেও রয়েছে দুটি দেশের মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক। আর এ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন।

কুয়ালালামপুরের জে ডব্লিউ মেরিয়ট হোটেলে বাংলাদেশ হাইকমিশন অয়োজিত বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি হবে আরও অগ্রগতি। বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।

মালয়েশিয়া সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে, আমি আমার আশা ও প্রার্থনা জানাই, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ সর্বদা সাফল্য লাভ করবে এবং সমৃদ্ধিতে বাস করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন, হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার, হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে বিদেশিদের মিলনমেলা বসেছিল মালয়েশিয়ায়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দূতালয় প্রধান কাউন্সেলর রাজনৈতিক ফারহানা আহমেদ চৌধুরী।

প্রধান অতিথি মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মেলেকার গভর্নর তুন সেরি সেতিয়া ডা. হাজী মো. আলী বিন মো. রোস্তম, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়াই বি তুয়ান মুস্তাফা মোহাম্মদ ইউনুস বিন সাকমুদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় মহাসচিব টি.এস. ড. নাগুলেন্দ্রান কাঙ্গাইয়াতকারাসু, ওয়াইবি সিনেটর ভেল পার, উপ-মহাসচিব (দ্বিপাক্ষিক বিষয়), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দাতো নরম্যান বিন মুহাম্মাদ এবং উপ-মহাসচিব (বাণিজ্য), আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় হেরিল ইয়াহরি ইয়াকব।

অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা, পর্যটন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর ভিডিওচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পর্যটনের ঐতিহ্যের প্রদর্শনী নজর কাড়ে অতিথিদের। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানের গ্যালারি মনযোগ সহকারে অতিথিরা একবার দেখলেন।

অনুষ্ঠানে কথায় কথায় উঠে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস। উপস্থিত বাংলাদেশি এবং বিদেশি অতিথিরাও আরও একবার জানলেন সেই ইতিহাস।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার অতিথিদের সামনে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া, তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ আত্মোৎসর্গকারী মা-বোনদের অবদানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া শিক্ষা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, সংস্কৃতি, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জ্বালানি এবং প্রবাসীদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩৭ সালের মধ্যে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্পের কথাও তিনি তুলে ধরেন। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু মালয়েশিয়াকে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের স্থানীয় বাজার, ৩০০ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক বাজার এবং বৃহত্তর বৈশ্বিক বাজারের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নিতে নতুন প্রতিষ্ঠিত ১০০টি অর্থনৈতিক জোন, ৩৮টি হাইটেক পার্ক এবং বাংলাদেশে অন্যান্য মেগা অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এরপর, উপস্থিত অতিথিরা বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন । পরিশেষে, আগত অতিথিদের কাচ্চি বিরিয়ানি, ফুচকা ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি মিষ্টিসহ অন্যান্য মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয়।

প্রবাসী কমিউনিটি, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন এবং প্রবাসী সাংবাদিক নেতাসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানটি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

মালয়েশিয়া-বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট টাইম : 11:19:18 am, Friday, 24 March 2023

মালয়েশিয়া ডেস্ক: ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া। অকৃত্রিম বন্ধু দুই দেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি প্রায় অভিন্ন থাকলেও রয়েছে দুটি দেশের মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক। আর এ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন।

কুয়ালালামপুরের জে ডব্লিউ মেরিয়ট হোটেলে বাংলাদেশ হাইকমিশন অয়োজিত বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি হবে আরও অগ্রগতি। বাংলাদেশের ৫২তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।

মালয়েশিয়া সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে, আমি আমার আশা ও প্রার্থনা জানাই, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণ সর্বদা সাফল্য লাভ করবে এবং সমৃদ্ধিতে বাস করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন, হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার, হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে কূটনীতিকদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে বিদেশিদের মিলনমেলা বসেছিল মালয়েশিয়ায়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দূতালয় প্রধান কাউন্সেলর রাজনৈতিক ফারহানা আহমেদ চৌধুরী।

প্রধান অতিথি মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মেলেকার গভর্নর তুন সেরি সেতিয়া ডা. হাজী মো. আলী বিন মো. রোস্তম, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়াই বি তুয়ান মুস্তাফা মোহাম্মদ ইউনুস বিন সাকমুদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় মহাসচিব টি.এস. ড. নাগুলেন্দ্রান কাঙ্গাইয়াতকারাসু, ওয়াইবি সিনেটর ভেল পার, উপ-মহাসচিব (দ্বিপাক্ষিক বিষয়), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দাতো নরম্যান বিন মুহাম্মাদ এবং উপ-মহাসচিব (বাণিজ্য), আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় হেরিল ইয়াহরি ইয়াকব।

অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন হাইকমিশনার এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা, পর্যটন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর ভিডিওচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পর্যটনের ঐতিহ্যের প্রদর্শনী নজর কাড়ে অতিথিদের। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দর্শনীয় স্থানের গ্যালারি মনযোগ সহকারে অতিথিরা একবার দেখলেন।

অনুষ্ঠানে কথায় কথায় উঠে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস। উপস্থিত বাংলাদেশি এবং বিদেশি অতিথিরাও আরও একবার জানলেন সেই ইতিহাস।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হয়। হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার অতিথিদের সামনে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া, তিনি মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ আত্মোৎসর্গকারী মা-বোনদের অবদানের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া শিক্ষা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা, সংস্কৃতি, পর্যটন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জ্বালানি এবং প্রবাসীদের কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করেছে।

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ এবং ২০৩৭ সালের মধ্যে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

বাংলাদেশের হাইকমিশনার ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সংকল্পের কথাও তিনি তুলে ধরেন। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু মালয়েশিয়াকে ১৭০ মিলিয়ন মানুষের স্থানীয় বাজার, ৩০০ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক বাজার এবং বৃহত্তর বৈশ্বিক বাজারের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নিতে নতুন প্রতিষ্ঠিত ১০০টি অর্থনৈতিক জোন, ৩৮টি হাইটেক পার্ক এবং বাংলাদেশে অন্যান্য মেগা অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এরপর, উপস্থিত অতিথিরা বাংলাদেশি শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন । পরিশেষে, আগত অতিথিদের কাচ্চি বিরিয়ানি, ফুচকা ও ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি মিষ্টিসহ অন্যান্য মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয়।

প্রবাসী কমিউনিটি, মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন এবং প্রবাসী সাংবাদিক নেতাসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তার উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে অনুষ্ঠানটি।