Dhaka , Friday, 29 March 2024

গঙ্গাচড়ার মিষ্টিকুমড়া যাচ্ছে মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরে

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:18:35 am, Saturday, 8 April 2023
  • 45 বার

নিউজ ডেস্ক: রংপুরের তিস্তা নদী বেষ্টিত গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলে উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। এ ঘটনা পাল্টে দিয়েছে এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র। তিস্তার নদীর জেগে ওঠা চর এখন পরিণত হয়েছে ফসলের মাঠে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, তামাক, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। সরেজমিন গঙ্গাচড়া উপজেলায় গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক চরসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে দেখা গেছে, বালুর চরে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া।

এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আর এ কারণেই মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। এ উপজেলারর ১০ ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়নই তিস্তা নদী বেষ্ঠিত। শুকনো মৌসুমে চকচকে বালু থাকায় স্থানীয়রা এসব চরকে ‘সাদা সোনার দেশ’ বলে থাকেন।

সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য চরে কুমড়া খেত পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও খালি না রেখে আবাদের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা অনুযায়ী চরের পতিত জমিগুলোকে ফসল আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করে উচ্চফলনশীল জাত আবিষ্কারসহ আধুনিক চাষ পদ্ধতি মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে করে চরের ফসল উৎপাদন বেড়েছে।

সরেজমিন আরও দেখা গেছে, তিস্তার বালু চরে একরের পরে একর জমিতে আবাদ হয়েছে কুমড়া। সোলার প্যানেল লাগিয়ে সেচ দেওয়া হচ্ছে। অক্টোবরের প্রথম দিকে লাগানো এ কুমড়া মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এ চরের আবাদ করা কুমড়াই এখন মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে। চর ছালাপাক ছাড়াও, রাজবল্বভ, ধামুর, মহিপুর, শংকরদহ, কোলকোন্দ চরসহ বিভিন্ন চরে কুমড়ার আবাদ হচ্ছে। সাদা চরে সবুজের সমারোহে প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে ভিন্ন এক দৃশ্য।

এখানকার উৎপাদিত কুমড়া বাজারজাত করার জন্য স্থানীয় বাজার গড়ে উঠেছে রাজবল্বভ মতলেবের বাজারে। বাজারেও দেখা গেছে, এক পাশে কুমড়ার বিশাল স্তূপ। নারী-পুরুষ মিলে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক কুমড়া প্যাকেটজাত করতে ব্যস্ত সময় পার কছেন। প্যাকেট করা শ্রমিক মঞ্জুরা বেগম, সামছুাহারসহ কয়েকজন জানালেন, কুমড়া প্যাকেট করা বাবদ তাদের প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এই টাকা তাদের সংসারের বাড়তি খরচের কাজে লাগে। স্থানীয় ক্রেতা হাবিবুর রহমান জানান, তিনি স্থানীয়ভাবে কুমড়া সংগ্রহ করে এ বাজারে নিয়ে আসেন। এখন থেকেই প্যাকেট হয়ে সরাসরি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ আতোয়ার রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ২০০ মেট্রিক টনের বেশি কুমড়া মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। প্রতি কেজি কুমড়ার দাম পড়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ৭৫০ হেক্টর চরে কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এসব জমি থেকে ২৮ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন কুমড়ার উৎপাদন হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

গঙ্গাচড়ার মিষ্টিকুমড়া যাচ্ছে মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরে

আপডেট টাইম : 08:18:35 am, Saturday, 8 April 2023

নিউজ ডেস্ক: রংপুরের তিস্তা নদী বেষ্টিত গঙ্গাচড়ার চরাঞ্চলে উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে। এ ঘটনা পাল্টে দিয়েছে এলাকার অর্থনৈতিক চিত্র। তিস্তার নদীর জেগে ওঠা চর এখন পরিণত হয়েছে ফসলের মাঠে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, তামাক, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। সরেজমিন গঙ্গাচড়া উপজেলায় গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক চরসহ বিভিন্ন চরে গিয়ে দেখা গেছে, বালুর চরে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া।

এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আর এ কারণেই মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। এ উপজেলারর ১০ ইউনিয়নের মধ্যে সাতটি ইউনিয়নই তিস্তা নদী বেষ্ঠিত। শুকনো মৌসুমে চকচকে বালু থাকায় স্থানীয়রা এসব চরকে ‘সাদা সোনার দেশ’ বলে থাকেন।

সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য চরে কুমড়া খেত পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও খালি না রেখে আবাদের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা অনুযায়ী চরের পতিত জমিগুলোকে ফসল আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করে উচ্চফলনশীল জাত আবিষ্কারসহ আধুনিক চাষ পদ্ধতি মাঠপর্যায়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে করে চরের ফসল উৎপাদন বেড়েছে।

সরেজমিন আরও দেখা গেছে, তিস্তার বালু চরে একরের পরে একর জমিতে আবাদ হয়েছে কুমড়া। সোলার প্যানেল লাগিয়ে সেচ দেওয়া হচ্ছে। অক্টোবরের প্রথম দিকে লাগানো এ কুমড়া মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত পাওয়া যাবে। এ চরের আবাদ করা কুমড়াই এখন মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে। চর ছালাপাক ছাড়াও, রাজবল্বভ, ধামুর, মহিপুর, শংকরদহ, কোলকোন্দ চরসহ বিভিন্ন চরে কুমড়ার আবাদ হচ্ছে। সাদা চরে সবুজের সমারোহে প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে ভিন্ন এক দৃশ্য।

এখানকার উৎপাদিত কুমড়া বাজারজাত করার জন্য স্থানীয় বাজার গড়ে উঠেছে রাজবল্বভ মতলেবের বাজারে। বাজারেও দেখা গেছে, এক পাশে কুমড়ার বিশাল স্তূপ। নারী-পুরুষ মিলে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক কুমড়া প্যাকেটজাত করতে ব্যস্ত সময় পার কছেন। প্যাকেট করা শ্রমিক মঞ্জুরা বেগম, সামছুাহারসহ কয়েকজন জানালেন, কুমড়া প্যাকেট করা বাবদ তাদের প্রতিদিন ৩০০ টাকা করে দেওয়া হয়। এই টাকা তাদের সংসারের বাড়তি খরচের কাজে লাগে। স্থানীয় ক্রেতা হাবিবুর রহমান জানান, তিনি স্থানীয়ভাবে কুমড়া সংগ্রহ করে এ বাজারে নিয়ে আসেন। এখন থেকেই প্যাকেট হয়ে সরাসরি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে।

রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইনচার্জ আতোয়ার রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ২০০ মেট্রিক টনের বেশি কুমড়া মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। প্রতি কেজি কুমড়ার দাম পড়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ৭৫০ হেক্টর চরে কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এসব জমি থেকে ২৮ হাজার ৮৫০ মেট্রিক টন কুমড়ার উৎপাদন হবে।