প্রবাস ডেস্ক: নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সে হিলসাইড এভিনিউতে কাওরান বাজার সুপার মার্কেট-এ শনিবার ভোরে এক দু:সাহসিক ডাকাতি হয়েছে। তালাবদ্ধ সুপার মার্কেটে পেছনের দরজার তালা ভেঙে ডাকাতরা সেইফটি বক্স ভেঙে নগদ প্রায় ৪০ হাজার ডলার নিয়েছে।
সুপার মার্কেটের মালিক বাংলাদেশি-আমেরিকান ইলিয়াস খান জানান, প্রতিদিন রাত ১১টায় বন্ধ এবং পরদিন সকাল ৯টায় খোলা হয়। সে অনুযায়ী ঈদের আগের দিন বৃহস্পতিবার ও ঈদের দিন শুক্রবার বেচা-বিক্রির সমুদয় অর্থ সেইফটি বক্সে রেখে বাসায় চলে যাই। যথারীতি পরদিন অর্থাৎ শনিবার সকাল ৯টায় আমার ম্যানেজার স্টোর খুলে খুচরা পয়সার প্যাকেট আনতে যান ওপরের তলার অফিসে। সেখানে গিয়েই আৎকে উঠেন। কারণ, সবকিছু তছনছ করা হয়েছে। সেইফটি বক্সের তালা ভেঙে খোলা অবস্থায় দেখেই তিনি আমাকে ফোন করেন। সাথে সাথে আমি বাসা থেকে সুপার মার্কেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার সময় আমার মেয়েকে অনুরোধ করি পুলিশকে জানাতে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমি সুপার মার্কেটে এসে পৌঁছানোর পরই পুলিশও উপস্থিত হয়।
কুইন্সের বিভিন্ন স্থানে কাওরান বাজার সুপার মার্কেট নামে ৩টি বড় গ্রোসারি স্টোরের মালিক ইলিয়াস খান জানান, ১৪৮ স্ট্রিট ও হিলসাইডের এই সুপারমার্কেট থেকে নগদ অর্থ ছাড়া আর কিছুই নেয়নি ডাকাতরা। তদন্তকারি ডিটেকটিভও তা প্রত্যক্ষ করেছেন।
এ সময় ইলিয়াস খান আরো জানান, ৭/৮ বছর আগে এই সুপারমার্কেটে আরেকবার চুরির ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় এক বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তিনদিন হাজতে থাকার পর সে মুক্তিলাভ করেছে। ইলিয়াস খান উল্লেখ করেন, সিসিটিভি পরীক্ষা করে দেখেছি যে, ৪/৫ ডাকাতের সকলেই মুখোশধারী ছিল। তাই কাউকে চেনা যাচ্ছে না। ফুটেজ নিয়ে গেছেন ডিটেকটিভ। তদন্তু চলছে বলে পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন। তবে, শনিবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত দুর্বৃত্ত গ্রেফতার দূরের কথা শনাক্ত করাই সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে নিউইয়র্ক সিটির সুপারমার্কেট, গ্রোসারি স্টোরে চুরির ঘটনা চরমে উঠেছে। দুর্বৃত্তরা কেনাকাটার আড়ালে মূল্যবান সামগ্রি চুরি করছে। এ সময় বাধা দিতে গেলে চলতি বছর ব্রুকলীন, কুইন্স, ব্রঙ্কস এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে হতাহতের বেশ কটি ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বেশ ক’জনকে গ্রেফতার করে কোর্টে সোপর্দ করার পরই জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো চুরির ধান্দায় নেমেছে দুর্বৃত্তরা।
এমন অবস্থার অবসানে নিউইয়র্ক সিটির গ্রোসারি স্টোরের মালিকেরা সংঘবদ্ধ হয়েছেন ‘কালেকটিভ অ্যাকশন টু প্রটেক্স আওয়ার স্টোর’ (সিএপিএস) ব্যানারে। তারা স্টেট গভর্ণর ক্যাথি হোকুল এবং অন্যান্য সিটি প্রশাসন সমীপে গত জানুয়ারিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য। তবে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ গ্রহণের সংবাদ জানা যায়নি। ইলিয়াস খান বাংলাদেশি ব্যবসায়ীগণকেও সংঘবদ্ধ হয়ে চুরি-ডাকাতি বন্ধে সরব থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।