Dhaka , Thursday, 18 April 2024

ভালোবাসার টানে মালয়েশিয়ার মেয়ে হবিগঞ্জে, অতঃপর…

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:38:04 am, Tuesday, 2 May 2023
  • 35 বার

মালয়েশিয়া ডেস্ক: আমি চিনিগো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী। রবীন্দ্রনাথের মতো অনেক বাঙালিই প্রেমে পড়েছেন ভিনদেশিদের, করেছেন জীবনসঙ্গী। আবার অনেক বিদেশিনী ভালোবাসার টানে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে। তেমনি একজন স্মৃতি নুর ফাতিম। সুদূর মালয়েশিয়া থেকে হবিগঞ্জ এসে মনের মানুষের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন বিদেশি এই তরুণী।

গত ২৪ এপ্রিল হবিগঞ্জে নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার নাগরিক এ তরুণীর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চার বছরের প্রণয়ের সম্পর্ককে পরিণয়ে রূপ দিলেন এ প্রেমিক যুগল। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে নিয়ে বেশ আনন্দে রয়েছেন কনে। আর ভিনদেশি বউয়ের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় আপ্লুত শ্বশুর-শাশুড়িসহ বরের পরিবারের লোকজনও।

২০১৬ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যান হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের যুবক আব্দুর রকিব খান রাজা। সেখানে ফাতিমের সঙ্গে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব হয়। তখন থেকে নিজ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাকে জানান রাজা। বাংলাদেশের সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কেও জেনে মুগ্ধ হন ফাতিম। নিজেও বাংলাদেশ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব রূপ নেয় ভালোবাসায়। আর সেখান থেকেই বিয়ের সিদ্ধান্ত। পরে ফাতিম তার পরিবারকে জানালে তারাও রাজাকে পছন্দ করেন। অবশেষে কয়েক মাস আগে তাকে বিয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে আসেন তারা।

গেল সপ্তাহে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ফাতিম। বিয়ের পর পরিবারের লোকজনকে নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের পিটিআই রোড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকছেন এ দম্পতি। দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা দেশেই স্থায়ীভাবে থাকবেন। কিছুদিন পর রাজা ফের মালয়েশিয়া চলে যাবেন এবং ফাতিম বাংলাদেশে থাকবেন। লেখাপড়া শেষে রাজা আবার দেশে ফিরলে প্রিয় বাংলাদেশেই থাকবেন বাকি জীবন।

এদিকে ভিনদেশি বধূ পেয়ে রাজার পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। হইচই পড়েছে পুরো এলাকায়। নববধূকে দেখতে ছুটে আসছেন অনেকেই। বিয়ের পর ফাতিমের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই অনেক খুশি। মেয়ের সঙ্গে তারা রাখছেন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ।

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে স্মৃতি নূর ফাতিম বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। এখানকার মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। এখানকার মাংসের কারি ও দই খেতে খুব ভালো লেগেছে।’

আব্দুর রকিব খান রাজা জানান, বিয়ের পর তারা অনেক ভালো আছেন এবং উভয়ের পরিবারও খুব খুশি। অল্প সময়ের মধ্যেই ফাতিম সবার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। সে চায় বাংলাদেশেই থাকতে।

রাজার বাবা সিদ্দিক খান ও মা দয়া বেগম বলেন, ‘ভাবতেও পারিনি ফাতিম আমাদের সঙ্গে এত সহজে মিশে যেতে পারবে। বিদেশি বউমা পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্প সময়ের মধ্যেই সে সবাইকে আপন করে নিয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

ভালোবাসার টানে মালয়েশিয়ার মেয়ে হবিগঞ্জে, অতঃপর…

আপডেট টাইম : 08:38:04 am, Tuesday, 2 May 2023

মালয়েশিয়া ডেস্ক: আমি চিনিগো চিনি তোমারে, ওগো বিদেশিনী। রবীন্দ্রনাথের মতো অনেক বাঙালিই প্রেমে পড়েছেন ভিনদেশিদের, করেছেন জীবনসঙ্গী। আবার অনেক বিদেশিনী ভালোবাসার টানে ছুটে এসেছেন বাংলাদেশে। তেমনি একজন স্মৃতি নুর ফাতিম। সুদূর মালয়েশিয়া থেকে হবিগঞ্জ এসে মনের মানুষের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন বিদেশি এই তরুণী।

গত ২৪ এপ্রিল হবিগঞ্জে নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার নাগরিক এ তরুণীর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে চার বছরের প্রণয়ের সম্পর্ককে পরিণয়ে রূপ দিলেন এ প্রেমিক যুগল। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে নিয়ে বেশ আনন্দে রয়েছেন কনে। আর ভিনদেশি বউয়ের আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় আপ্লুত শ্বশুর-শাশুড়িসহ বরের পরিবারের লোকজনও।

২০১৬ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে মালয়েশিয়া যান হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের যুবক আব্দুর রকিব খান রাজা। সেখানে ফাতিমের সঙ্গে পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব হয়। তখন থেকে নিজ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে তাকে জানান রাজা। বাংলাদেশের সামাজিক রীতিনীতি সম্পর্কেও জেনে মুগ্ধ হন ফাতিম। নিজেও বাংলাদেশ সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব রূপ নেয় ভালোবাসায়। আর সেখান থেকেই বিয়ের সিদ্ধান্ত। পরে ফাতিম তার পরিবারকে জানালে তারাও রাজাকে পছন্দ করেন। অবশেষে কয়েক মাস আগে তাকে বিয়ের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশে আসেন তারা।

গেল সপ্তাহে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ফাতিম। বিয়ের পর পরিবারের লোকজনকে নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের পিটিআই রোড এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকছেন এ দম্পতি। দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা দেশেই স্থায়ীভাবে থাকবেন। কিছুদিন পর রাজা ফের মালয়েশিয়া চলে যাবেন এবং ফাতিম বাংলাদেশে থাকবেন। লেখাপড়া শেষে রাজা আবার দেশে ফিরলে প্রিয় বাংলাদেশেই থাকবেন বাকি জীবন।

এদিকে ভিনদেশি বধূ পেয়ে রাজার পরিবারে বইছে খুশির বন্যা। হইচই পড়েছে পুরো এলাকায়। নববধূকে দেখতে ছুটে আসছেন অনেকেই। বিয়ের পর ফাতিমের বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই অনেক খুশি। মেয়ের সঙ্গে তারা রাখছেন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ।

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে স্মৃতি নূর ফাতিম বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। এখানকার মানুষের আতিথেয়তা ও ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ। এখানকার মাংসের কারি ও দই খেতে খুব ভালো লেগেছে।’

আব্দুর রকিব খান রাজা জানান, বিয়ের পর তারা অনেক ভালো আছেন এবং উভয়ের পরিবারও খুব খুশি। অল্প সময়ের মধ্যেই ফাতিম সবার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। সে চায় বাংলাদেশেই থাকতে।

রাজার বাবা সিদ্দিক খান ও মা দয়া বেগম বলেন, ‘ভাবতেও পারিনি ফাতিম আমাদের সঙ্গে এত সহজে মিশে যেতে পারবে। বিদেশি বউমা পেয়ে আমরা সবাই খুশি। অল্প সময়ের মধ্যেই সে সবাইকে আপন করে নিয়েছে।’