প্রবাস ডেস্ক: বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশন অব নোভা স্কসিয়ার (বিডিক্যান্স) উদ্যোগে লেবার্ণ কমিউনিটি সেন্টার বেডফোর্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ ও ঈদ পুনর্মিলনী আনন্দমেলা।
বৈশাখী মেলায় বিভিন্ন বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী সামগ্রীর পসরা সাজানো অনেক স্টল বসানো হয়। এসব স্টলে গ্রামবাংলার প্রায় সব ধরনের পিঠা, দই-মিষ্টি, মুড়ি-মুড়কি, জিলাপি, জামাকাপড়, হাওয়াই মিঠাই ও খাবারের সমাহার সবাইকে বাংলার সেই চিরচেনা গ্রামীণ বৈশাখী মেলার কথা মনে করিয়ে দেয়।
সবাই মিলে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। তারপর কানাডার জাতীয় সংগীতও পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোভা স্কসিয়ার এমপি লিনা মেটলেজ ডিয়াব, এমএলএ জন এ ম্যাকডোনাল্ড (এমএলএ, হ্যান্টস ইস্ট), কাউন্সিলর টনি ম্যাঞ্চিনি, ড্যানিয়েল বিঙ্গহ্যাম-প্যাঙ্কার্টজ (ইউএস ক্যন্সুলেট জেনারেল হ্যালিফ্যাক্স) এবং হ্যালিফ্যাক্সের মেয়র মাইক স্যাভেজ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধীজনরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এসময় নোভা স্কসিয়ার এমপি লিনা মেটলেজ ডিয়াব তার বক্তব্যে বিশেষ জোর দিয়ে বলেন, এমন আয়োজন ও সম্প্রীতি বজায় রাখলে কখনোই নতুন প্রজন্মের কানাডিয়ান-বাংলাদেশিরা তাদের ঐতিহ্য ভুলে যাবে না। তিনি বলেন, তিনি তার দাদা ও পরদাদার ঐতিহ্য ভুলে যাননি, কারণ তার পিতা তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, যেমনিভাবে তার পিতাকে তার দাদা শিখিয়েছিলেন।
হ্যালিফ্যাক্সের মেয়র মাইক স্যাভেজ তার বক্তব্যে হ্যালিফ্যাক্স রিজিওনাল মিনিউসিপিলিটির পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি এপ্রিল ১৪-২০ সপ্তাহকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে বাংলা হেরিটেজ সপ্তাহ ঘোষণা করেন। তিনি বিডিক্যান্সকে বাংলা হেরিটেজ সপ্তাহ স্বীকৃতির ঘোষণাপত্র হস্তান্তর করেন।
এরপর অনুষ্ঠানে শিশুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়। বাংলাদেশি কানাডিয়ান এসব শিশুর দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি চর্চা সত্যিই প্রশংসনীয়। অনুষ্ঠানে দ্বীপন্বীতা দে লোকসংগীত পরিবেশনা করেন, ফাইয়াজ জায়দান আরিয়ান ক্লাসিক্যাল ইসলামী সংগীত ও নজরুল সংগীত পরিবেশনা করেন। এরপর বিডিক্যান্সের পক্ষ থেকে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। উপস্থিত দেশিবিদেশি সবাই বাংলাদেশি খাবার উপভোগ করেন।
মধ্যাহ্নভোজ শেষে শিল্পী শ্রুতি চক্রবর্তীর গান সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করেন। মাহবুবুর রহমান ও তাহমিনা দেওয়ানের আবৃত্তি ফুলকপি কবিতা সবাইকে অনেক আনন্দ দেয়। বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত বাদ্যযন্ত্র শিল্পী সোনিয়া আফরোজ সেতার বাজিয়ে যন্ত্রসংগীত পরিবেশনা করেন। এরপর মিঠুন বরণ দে-র গান ও সাঈদা ফারজানা তানজীমের রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশিত হয়।
অতিথি শিল্পী গুরুপ্রসাদ দেবাশীষ তার একক লোকজ গানের আসরে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন। বিডিক্যান্সের এমন উদ্যোগ কানাডায় বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং নতুন প্রজন্মের কানাডিয়ান বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে– এমনটাই প্রত্যাশা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের।