Dhaka , Saturday, 23 September 2023
শিরোনাম :
চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ মেক্সিকো সিটিতে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী রাস্তা প্রশস্ত করতে ইরাকে ভাঙা হল তিনশ’ বছরের পুরনো মিনার, চারিদিকে নিন্দা অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে তিউনিসিয়া-ইইউ সমঝোতা শস্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, ইউক্রেন ছাড়ল শেষ শস্যবাহী জাহাজ ফ্রাঙ্কফুর্টে সান বাঁধানো লেকের ধারে জমে উঠেছিল প্রবাসীদের ঈদ উৎসব দশ মাস পর আবারও রাস্তায় ইরানের বিতর্কিত ‘নীতি পুলিশ’ বার্সেলোনায় ঐতিহ্যবাহী ‘বাংলার মেলা’ মার্কিন গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করলেই ইউক্রেনের ‘সর্বনাশ’, পুতিনের হুঁশিয়ারি ফ্রাঙ্কফুর্টে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের কনস্যুলার সেবা প্রদান কর্মসূচি পালিত

কীভাবে গড়ে উঠলো কানাডার বেগমপাড়া?

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:27:52 am, Saturday, 13 May 2023
  • 24 বার

প্রবাস ডেস্ক: উন্নত জীবনের খোঁজে কিংবা জীবনের অন্যরকম স্বাদ নিতে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায় মানুষ। একই কারণে বাংলাদেশ থেকেও অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। বিশেষ করে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র।

সংবাদপত্রের কল্যাণে ‘বেগমপাড়া’ শব্দটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনৈতিক নেতারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেন এবং সেই টাকায় বিদেশের মাটিতে তাদের স্ত্রী-সন্তানরা যাতে ভালোভাবে নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারেন সে ব্যবস্থা করেন।

সাধারণত সাহেবদের স্ত্রীদের ‘বেগম’ বলে সম্বোধন করা হয়। তো এই সাহেবদের স্ত্রীরা বিদেশের মাটিতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন বলে সেই স্থানগুলো ‘বেগমপাড়া’ নামে পরিচিত। তবে মানচিত্রে এ নামে কোনো জায়গা নেই।

‘বেগমপাড়া’ শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে লুট করা অর্থ এবং কালো টাকা। অভিযোগ রয়েছে, বিনিয়োগ ভিসায় কানাডায় সবচেয়ে বেশি পিআর সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশীরা। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমেই মিলত এই ভিসা। দেশের টাকা লুটে সেখানে তারা গড়েছেন আয়েশী জীবন। কানাডা সরকারের তথ্যমতে, ২০১৫-২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর তিন হাজারের অধিক বাংলাদেশী কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন। এবং ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পিআর পেয়েছেন ৪৪ হাজার ১৮৬ জন বাংলাদেশী।

অভিযোগ আছে, যেসব বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী কোটায় কানাডায় পিআর-এর সুযোগ পেয়েছেন তাদের একটা অংশ মূলত অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এই টাকা মূলত দেশ থেকে করা দুর্নীতি ও লুটের টাকা। এই টাকায় তারা কানাডায় বাড়ি কিনে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।

এই জীবনযাপনের সঙ্গেই মূলত ‘বেগমপাড়ার’ যোগসূত্র রয়েছে। ভারতীয় পরিচালক রশ্মি লাম্বা একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করেন- ‘বেগমপুরা: দি ওয়াইভস কলোনি।’ এই ফিল্মটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই বেগমপুরা শব্দ থেকেই মূলত বেগমপাড়া শব্দটি এসেছে। এই ফিল্মের বিষয় হলো স্বামী ছাড়া নিঃসঙ্গ নারীদের সংসার সামলানোর গল্প যারা কানাডার টরন্টোর পাশে লেক অন্টারিওর তীরে মিসিসাগা শহরে বড় বড় কন্ডোমিনিয়াম অর্থাৎ বহুতল ভবনে বাস করছেন।

কানাডার সাধারণ মানুষের কাছে এ ধরনের বিলাসবহুল ভবনে বাস করা স্বপ্নের মতো। কিন্তু তারা পারছেন কারণ তাদের স্বামীরা পরিবার কানাডায় রেখে কাজের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। সেখানে তারা কঠোর পরিশ্রম করে স্ত্রী-সন্তানের জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন। এবং তারা অধিকাংশই ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিক। কানাডার চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তারা ভালো আয়ের সুযোগ পান। এ কারণে পরিবার কানাডায় রেখে তারা মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান।

বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। ফিল্মের বেগমপুরার সঙ্গে কথিত বেগমপাড়ার কোনো মিল নেই। বেগমপাড়া এখানে প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত একটি শব্দ। যার মোদ্দা কথা- দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশে অর্জিত সম্পদ কানাডায় পাচার করে সেখানে আয়েশি জীবনযাপন করা। এই বেগমপাড়া আসলে কানাডায় পাড়ি জমানো দুর্নীতিগ্রস্তদের স্ত্রীদের দ্বিতীয় নিবাস অর্থে ব্যবহৃত হয়।

কানাডাপ্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর ‘টরন্টো স্টার’ পত্রিকায় অর্থ পাচারকারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করার সময় ‘বেগমপাড়া’ শব্দটি ব্যবহার করেন।

দুই উপায়ে কানাডায় বাড়ি কেনা যায়। সরাসরি নগদ টাকা দিয়ে বাড়ি কেনা এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ২০ থেকে ২৫ বছর মেয়াদী কিস্তির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি কেনা। বেশ কয়েকবছর আগেও কানাডায় বাড়ি কেনা সহজ ছিল। মাসে মাসে লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া দেয়ার চেয়ে কানাডায় বাড়ি কেনা লাভজনক ও সাশ্রয়ী। পরিবারের ভালো আয় থাকলে লোন দেয় কানাডিয়ান ব্যাংক। যেই লোনের মাসিক অর্থ বাড়ি ভাড়ার চেয়ে কম। তাই কানাডায় যারা বাস করতে চান তাদের ইচ্ছে থাকে বাড়ি কেনার।

তবে কানাডায় অনেক বাংলাদেশী এমন সব বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন যা স্থানীয়রা কিনতেও হিমশিম খান। এ কারণে কানাডার আবাসন খাতে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। সব মিলিয়ে সাধারণ খেটে খাওয়া অভিবাসীরাও ক্ষিপ্ত ওই বাংলাদেশীদের প্রতি। তারা তাদের ‘বেগমপাড়ার বাসিন্দা’ বলতে দ্বিধা করনে না। তাছাড়া সাধারণ অভিবাসীদের সঙ্গে এই বেগমপাড়ার বাসিন্দাদের তেমন কোনো সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি।

বাংলাদেশের সাবেক এক রাষ্ট্রদূত ব্রিটেনের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ পত্রিকায় বলেছিলেন, কানাডার টরন্টোর একটি জায়গাকে স্থানীয় বাংলাদেশীরা বেগমপাড়া বলে। এই বেগম পাড়ার বেগমদের সাহেবরা বেগমদের সঙ্গে থাকেন না। তারা থাকেন বাংলাদেশে। তারা কষ্ট করে টাকা বানান। যখন ক্লান্তি আসে টাকা বানাতে বানাতে, তখন বেগমপাড়ায় এসে পরিবারের সঙ্গে আরামে সময় কাটান। এই বাংলাদেশী বেগমদের আরাম-আয়েশ দেখলে হিংসায় জ্বলে মরতেন মোগল বেগমরাও। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট বিলাসী সামগ্রীতে ভরা। তাদের ছেলেমেয়েরা সেই দেশের ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। বেগমদের কাজ হলো ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করা, আর আরাম করা। এছাড়া কানাডায় এরকম অনেকগুলো বেগমপাড়া আছে।

বাংলাদেশী যারা কানাডায় বাড়ি ক্রয় করেছেন তাদের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে কানাডার সরকারের কাছে অর্থ কিভাবে উপার্জন হয়েছে তার কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না। তাই এদেশ থেকে কালো টাকা সাদা করতে কানাডায় নামে-বেনামে তারা বিনিয়োগ করেন। এতে কানাডিয়ান সরকারেরও লাভ, আর যারা বিনিয়োগ করল তাদেরও কালো টাকা সাদা হয়ে সম্পদে পরিণত হলো। কথিত বেগমপাড়া গড়ে ওঠার পেছনে এটিই মূল কথা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ

কীভাবে গড়ে উঠলো কানাডার বেগমপাড়া?

আপডেট টাইম : 08:27:52 am, Saturday, 13 May 2023

প্রবাস ডেস্ক: উন্নত জীবনের খোঁজে কিংবা জীবনের অন্যরকম স্বাদ নিতে বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমায় মানুষ। একই কারণে বাংলাদেশ থেকেও অভিবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশগুলো। বিশেষ করে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র।

সংবাদপত্রের কল্যাণে ‘বেগমপাড়া’ শব্দটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনৈতিক নেতারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেন এবং সেই টাকায় বিদেশের মাটিতে তাদের স্ত্রী-সন্তানরা যাতে ভালোভাবে নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করতে পারেন সে ব্যবস্থা করেন।

সাধারণত সাহেবদের স্ত্রীদের ‘বেগম’ বলে সম্বোধন করা হয়। তো এই সাহেবদের স্ত্রীরা বিদেশের মাটিতে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন বলে সেই স্থানগুলো ‘বেগমপাড়া’ নামে পরিচিত। তবে মানচিত্রে এ নামে কোনো জায়গা নেই।

‘বেগমপাড়া’ শব্দটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে লুট করা অর্থ এবং কালো টাকা। অভিযোগ রয়েছে, বিনিয়োগ ভিসায় কানাডায় সবচেয়ে বেশি পিআর সুযোগ পেয়েছেন বাংলাদেশীরা। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমেই মিলত এই ভিসা। দেশের টাকা লুটে সেখানে তারা গড়েছেন আয়েশী জীবন। কানাডা সরকারের তথ্যমতে, ২০১৫-২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর তিন হাজারের অধিক বাংলাদেশী কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছেন। এবং ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পিআর পেয়েছেন ৪৪ হাজার ১৮৬ জন বাংলাদেশী।

অভিযোগ আছে, যেসব বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী কোটায় কানাডায় পিআর-এর সুযোগ পেয়েছেন তাদের একটা অংশ মূলত অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এই টাকা মূলত দেশ থেকে করা দুর্নীতি ও লুটের টাকা। এই টাকায় তারা কানাডায় বাড়ি কিনে বিলাসী জীবনযাপন করছেন।

এই জীবনযাপনের সঙ্গেই মূলত ‘বেগমপাড়ার’ যোগসূত্র রয়েছে। ভারতীয় পরিচালক রশ্মি লাম্বা একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করেন- ‘বেগমপুরা: দি ওয়াইভস কলোনি।’ এই ফিল্মটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই বেগমপুরা শব্দ থেকেই মূলত বেগমপাড়া শব্দটি এসেছে। এই ফিল্মের বিষয় হলো স্বামী ছাড়া নিঃসঙ্গ নারীদের সংসার সামলানোর গল্প যারা কানাডার টরন্টোর পাশে লেক অন্টারিওর তীরে মিসিসাগা শহরে বড় বড় কন্ডোমিনিয়াম অর্থাৎ বহুতল ভবনে বাস করছেন।

কানাডার সাধারণ মানুষের কাছে এ ধরনের বিলাসবহুল ভবনে বাস করা স্বপ্নের মতো। কিন্তু তারা পারছেন কারণ তাদের স্বামীরা পরিবার কানাডায় রেখে কাজের জন্য পাড়ি জমিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। সেখানে তারা কঠোর পরিশ্রম করে স্ত্রী-সন্তানের জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন। এবং তারা অধিকাংশই ভারত এবং পাকিস্তানের নাগরিক। কানাডার চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যে তারা ভালো আয়ের সুযোগ পান। এ কারণে পরিবার কানাডায় রেখে তারা মধ্যপ্রাচ্যে চলে যান।

বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি এমন নয়। ফিল্মের বেগমপুরার সঙ্গে কথিত বেগমপাড়ার কোনো মিল নেই। বেগমপাড়া এখানে প্রতীকী অর্থে ব্যবহৃত একটি শব্দ। যার মোদ্দা কথা- দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশে অর্জিত সম্পদ কানাডায় পাচার করে সেখানে আয়েশি জীবনযাপন করা। এই বেগমপাড়া আসলে কানাডায় পাড়ি জমানো দুর্নীতিগ্রস্তদের স্ত্রীদের দ্বিতীয় নিবাস অর্থে ব্যবহৃত হয়।

কানাডাপ্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর ‘টরন্টো স্টার’ পত্রিকায় অর্থ পাচারকারী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করার সময় ‘বেগমপাড়া’ শব্দটি ব্যবহার করেন।

দুই উপায়ে কানাডায় বাড়ি কেনা যায়। সরাসরি নগদ টাকা দিয়ে বাড়ি কেনা এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ২০ থেকে ২৫ বছর মেয়াদী কিস্তির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি কেনা। বেশ কয়েকবছর আগেও কানাডায় বাড়ি কেনা সহজ ছিল। মাসে মাসে লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া দেয়ার চেয়ে কানাডায় বাড়ি কেনা লাভজনক ও সাশ্রয়ী। পরিবারের ভালো আয় থাকলে লোন দেয় কানাডিয়ান ব্যাংক। যেই লোনের মাসিক অর্থ বাড়ি ভাড়ার চেয়ে কম। তাই কানাডায় যারা বাস করতে চান তাদের ইচ্ছে থাকে বাড়ি কেনার।

তবে কানাডায় অনেক বাংলাদেশী এমন সব বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন যা স্থানীয়রা কিনতেও হিমশিম খান। এ কারণে কানাডার আবাসন খাতে এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দেয়। সব মিলিয়ে সাধারণ খেটে খাওয়া অভিবাসীরাও ক্ষিপ্ত ওই বাংলাদেশীদের প্রতি। তারা তাদের ‘বেগমপাড়ার বাসিন্দা’ বলতে দ্বিধা করনে না। তাছাড়া সাধারণ অভিবাসীদের সঙ্গে এই বেগমপাড়ার বাসিন্দাদের তেমন কোনো সম্পর্কও গড়ে ওঠেনি।

বাংলাদেশের সাবেক এক রাষ্ট্রদূত ব্রিটেনের ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ পত্রিকায় বলেছিলেন, কানাডার টরন্টোর একটি জায়গাকে স্থানীয় বাংলাদেশীরা বেগমপাড়া বলে। এই বেগম পাড়ার বেগমদের সাহেবরা বেগমদের সঙ্গে থাকেন না। তারা থাকেন বাংলাদেশে। তারা কষ্ট করে টাকা বানান। যখন ক্লান্তি আসে টাকা বানাতে বানাতে, তখন বেগমপাড়ায় এসে পরিবারের সঙ্গে আরামে সময় কাটান। এই বাংলাদেশী বেগমদের আরাম-আয়েশ দেখলে হিংসায় জ্বলে মরতেন মোগল বেগমরাও। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট বিলাসী সামগ্রীতে ভরা। তাদের ছেলেমেয়েরা সেই দেশের ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। বেগমদের কাজ হলো ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা করা, আর আরাম করা। এছাড়া কানাডায় এরকম অনেকগুলো বেগমপাড়া আছে।

বাংলাদেশী যারা কানাডায় বাড়ি ক্রয় করেছেন তাদের অন্যতম সুবিধা হচ্ছে কানাডার সরকারের কাছে অর্থ কিভাবে উপার্জন হয়েছে তার কোনো জবাবদিহিতা করতে হয় না। তাই এদেশ থেকে কালো টাকা সাদা করতে কানাডায় নামে-বেনামে তারা বিনিয়োগ করেন। এতে কানাডিয়ান সরকারেরও লাভ, আর যারা বিনিয়োগ করল তাদেরও কালো টাকা সাদা হয়ে সম্পদে পরিণত হলো। কথিত বেগমপাড়া গড়ে ওঠার পেছনে এটিই মূল কথা।