Dhaka , Wednesday, 29 November 2023
শিরোনাম :
চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ মেক্সিকো সিটিতে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী রাস্তা প্রশস্ত করতে ইরাকে ভাঙা হল তিনশ’ বছরের পুরনো মিনার, চারিদিকে নিন্দা অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে তিউনিসিয়া-ইইউ সমঝোতা শস্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, ইউক্রেন ছাড়ল শেষ শস্যবাহী জাহাজ ফ্রাঙ্কফুর্টে সান বাঁধানো লেকের ধারে জমে উঠেছিল প্রবাসীদের ঈদ উৎসব দশ মাস পর আবারও রাস্তায় ইরানের বিতর্কিত ‘নীতি পুলিশ’ বার্সেলোনায় ঐতিহ্যবাহী ‘বাংলার মেলা’ মার্কিন গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করলেই ইউক্রেনের ‘সর্বনাশ’, পুতিনের হুঁশিয়ারি ফ্রাঙ্কফুর্টে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রবাসীদের কনস্যুলার সেবা প্রদান কর্মসূচি পালিত

প্রবাসী সুরক্ষা বূহ্য : ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:11:32 am, Saturday, 20 May 2023
  • 29 বার

প্রবাস ডেস্ক: ব্রিটিশ আমল থেকেই দেশের জনশক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বিশাল জনশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে সরকার তৎপর হয় এবং এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয় জনশক্তি রপ্তানি। কালক্রমে বিশ্বচাহিদার প্রেক্ষিতে সাধারণকর্মী হিসেবে বাংলাদেশের জনশক্তি পাঠায়।

সবুজ কভারে মোড়া পাসপোর্টধারীরা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে। ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী তাদের মেধা, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠতা দিয়ে সে দেশ এবং নিজ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির চাকা ঈর্ষণীয়ভাবে সচল রাখতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয় দৈনন্দিন খরচের খাতে। রেমিট্যান্স পাওয়ার পরে একটি পরিবারের আয় পূর্বের তুলনায় ৮২ শতাংশ বাড়ে। তাছাড়া প্রবাসীদের পরিবার-পরিজন অধিকাংশ গ্রামে বসবাস করার ফলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় ও সঞ্চয় বাড়ার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতির কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বাড়ে বহুলাংশে।

প্রবাসী কর্মীদের এ অবদানের বিষয়টি বিবেচনা করে তৎকালীন সরকার ইমিগ্র্যাশন অর্ডিন্যাস-১৯৮২ এর ১৯ (১) ধারার ক্ষমতাবলে ১৯৯০ সালে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল গঠন করে। ফলে ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০১৮’ এর মাধ্যমে ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড’ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পূর্বে এটি অতিপুরাতন সংস্থা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোয় (বিএমইটি) সীমিত আকারে প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে কাজ করে।

আলাদা করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড গঠন করার ফলে প্রবাসী কর্মী ও তার পরিবারের বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির পথ সুগম হয়। একই সঙ্গে এই ওয়েজ বোর্ডের অধীনে বাংলাদেশের কর্মী অধ্যুষিত দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে কল্যাণ সহকারী এবং আইন সহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। অনেক মিশনে গাড়ি এবং কর্মীদের জন্য হোস্টেল বা শেল্টার হাউজ পরিচালনা করছে।

দেশের বিমান বন্দরগুলোতে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক স্থাপন ও কর্মী নিয়োগ করে কেবল বিদেশগামী ও ফেরত কর্মীদের সেবা দিচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে দূরদূরান্তের কর্মীদের সাময়িক অবস্থানের জন্য হোস্টেল চালু করেছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সুবিধা পেতে কোন দেশে নিশ্চিত কাজ নিয়ে গমন করার পূর্বে সরকারের অনুমোদন পাবার শর্ত হিসেবে দেশ ত্যাগের আগেই এই বোর্ডের সদস্য হতে হয়। অর্থাৎ এই বোর্ডের সদস্য না হয়ে কেউ বহির্গমন অনুমোদন পাবে না, ইমিগ্রেশন দেশ ত্যাগের অনুমোদন দেবে না।

তবে ভিজিট ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা বা মেডিকেল ভিসা বা অন্যকোনো ভিসা নিয়ে কোনো দেশে যাওয়ার পর থেকে যাওয়া এবং অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করে অবস্থান করা বাংলাদেশের নাগরিকদের সে দেশে কাজ করার বৈধতা পেলে তাদেরও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দিয়েছে সরকার।

অর্থাৎ বৈধভাবে কর্মীভিসা নিয়ে দেশ থেকে রওয়ানা দেওয়ার আগে এবং কোন দেশে গিয়ে বৈধভাবে কর্মী ভিসা পেলে এই বোর্ডের সদস্য হওয়া যায়।

এভাবে সদস্য পদ গ্রহণকারী প্রবাসী কর্মীরা তাদের মেধাবী সন্তানদের জন্য প্রতি বছর বোর্ড থেকে শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন। প্রবাসীদের সন্তানরা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবাসী কোটায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রবাসে মৃত্যু হলে মরদেহ দেশে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছেন। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় বিমানবন্দরে মরদেহ পরিবহন ও দাফন খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন।

প্রবাসে মৃত্যু হলে মৃত কর্মীর নমিনি বা পরিবারকে তিন লাখ টাকা আর্থিক অনুদান, পুনর্বাসন ঋণসহ আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়াও অসুস্থ প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরত এলে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। প্রবাসী কর্মী এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষা ও মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া, তাদের আস্থা অর্জন, মৃত কর্মীদের মরদেহ দেশে আনা, ব্যয় নির্বাহ অর্থ দিয়ে থাকে।

অধুনা দেশে প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাস পল্লী নামক আবাসন সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ড। ফলে বিদেশে বসেই দেশে সুন্দর পরিবেশ ও সুবিধা সংবলিত আবাসন নিশ্চিত করতে পারবে।

এছাড়াও প্রবাসফেরত দক্ষ কর্মীদের দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য বিশেষ রিইন্টিগ্রেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কল্যাণ বোর্ড। তাছাড়া, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৫১০ জন আহত ও অসুস্থ প্রবাসীকে দেশে ফেরত আনয়ন ও চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে ১৪৪.২৩ মিলিয়ন টাকা।

১৯৭৭ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ২২২৯০ জন প্রবাসীদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ, বিমা সার্ভিস বেনিফিটি ইত্যাদি বাবদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে ৮৪১৫.১১ মিলিয়ন টাকা। ২০২১-২০২২ পর্যন্ত প্রবাসীর মোট ৭৩০ জন স্পেশাল সন্তানদের ভাতা দেওয়া হয়েছে ৮.৭৬ মিলিয়ন টাকা। ১৯৯৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৪৮,৩১১ জন মৃত প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে ৩ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে মোট ১৩,১১৩ মিলিয়ন টাকা।

এছাড়া ১৯৯৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৪৭,৮০২ জন প্রবাসে মৃত কর্মীর দেহ পরিবহন ও দাফন খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে ১৫১৯.৯৩ মিলিয়ন টাকা এবং এরই মধ্যে ২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ২৩,৮৪৭ জন প্রবাসী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে ৩৯৮.৪৪ মিলিয়ন টাকা।

সেদিক বিবেচনা করে এ কথা বলা যায় যে, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড দিনে দিনে প্রবাসী কর্মীর সুরক্ষা বূহ্য হয়ে উঠছে। যারা দেশ ত্যাগ করার আগেই কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হয়ে বিদেশে কাজে নিয়োজিত আছে তাদের পুনরায় সদস্য হবার কোনো প্রয়োজন নেই। যে পাসপোর্ট দিয়ে সদস্য হয়েছিল সে পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন কার্ড সংরক্ষণ করলেই হবে। কারণ কর্মী সদস্য কি না যাচাইয়ের জন্য দরকার হবে।

তবে যারা কর্মী ভিসা ব্যতীত বিভিন্ন ভিসা নিয়ে বা অবৈধভাবে কোনো দেশে প্রবেশ করে এবং পরে বৈধতা পায় তাদের কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হতে হবে দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ শাখার মাধ্যমে। এই সুযোগ প্রথম শুরু হয় ২০১৯ সালে কুয়ালালামপুর থেকে তৎকালীন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের পর থেকে সদস্য সংগ্রহের হার খুব কম বলে ওয়েজ বোর্ডের মাধ্যেমে জানা গেছে। সদস্য সংগ্রহের জন্য লিফলেট বিতরণ করে, বিভিন্ন এলাকায় সভা করে এবং প্রচারনা অব্যাহত রাখে। কোনো দেশ অবৈধ কর্মীদের বৈধতা পাঠালেই যে সে কর্মীকে ওয়েজ বোর্ডের সদস্য হতে হবে এমন নয়, কারণ অনেক বৈধ কর্মী যিনি ওয়েজ বোর্ডের সদস্য কিন্তু কোন কারণে অবৈধ হয়েছেন এবং বৈধতা পেয়েছেন তাকে পুনরায় সদস্য হতে হবে না। এ কারণে বৈধকরণ কর্মসূচি হলেই যে সদস্য বৃদ্ধি পাবে এমন নয় বরং যারা কখনোই ওয়েজ বোর্ডের সদস্য ছিল না বৈধতাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে কেবল তারাই সদস্য হতে পারবে এবং হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হওয়া এবং এ বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অধিকাংশ প্রবাসীর ধারণা স্পষ্ট নাই। একই সাথে মালয়েশিয়ান সরকারের দেওয়া নানান সুবিধা সম্পর্কেও অনেকের ধারণা নেই। যেমন বাংলাদেশের কোনো বৈধ কর্মী মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গু হলে, অঙ্গহানি হলে বা মৃত্যু হলে দেশে থেকেও নিজে ও পরিবার আজীবন মালয়েশিয়া সরকারের সুবিধা পাবে, এসব সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের ওয়েজ বোর্ডের সাথে সেদেশের সোশ্যাল সিকিউরিটি সংস্থার সাথে চুক্তি করা খুবই জরুরি। দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ প্রান্তে ঝুলে আছে। কল্যাণ বোর্ড তৎপর হলে কর্মীর আজীবন সুবিধাপ্রাপ্ত নিশ্চিত হবে।

বিগত সময়ে মালয়েশিয়া সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পেরেছে এবং কর্মী ভিসা ব্যতীত আগমন বন্ধ করায় অবৈধভাবে অবস্থান করা এবং পরবর্তীতে বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বরং দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মালয়েশিয়া সরকারের পলিসি অনুযায়ী সে দেশে অবৈধভাবে কোনো কর্মী অবস্থান করতে পারবে না। তাই অনুপ্রবেশ করে পূর্বে সিক্স পি, থ্রি প্লাস ওয়ান এর সুযোগে বৈধতা পেয়েছে তাদের কেবল সদস্য হবার সুযোগ আছে। স্টুডেন্ট ভিসা শেষে কর্মী ভিসায় যারা অবস্থান করছে তাদেরও সুযোগ আছে সদস্য হওয়ার।

এদের মধ্যে অনেকে সদস্য হয়েছে তবে অধিকাংশ সদস্য হয়নি। কারণ মালয়েশিয়ায় কর্মীদের ভিসা প্রাপ্তি, কাজ ও অবস্থান করার পদ্ধতি অনুযায়ী কর্মীদের অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। যদি না নিয়োগকর্তা বা এজেন্ট সুযোগ দেয়। তাই নিয়োগকর্তা ও এজেন্টকে বুঝিয়ে সদস্য সংগ্রহ করার কোনো বিকল্প নেই।

অন্যদিকে সদস্য হওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটি জটিল ও কঠিন যা সাধারণ কর্মীর পক্ষে করা সম্ভব নয়। সদস্য হওয়ার জন্য নানান ধরনের তথ্য দিতে হয় এসব তথ্য অনলাইনে কম্পিউটারে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের মালিকানাধীন রেমিট্যান্স হাউজগুলো প্রচার করে কিন্তু সদস্যভুক্তির কাজে তাদের সহযোগিতা নিতে পারে।

অনেক সময় বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে তথ্য দিলেও ঢাকা ওয়েজ বোর্ডের হেড অফিস থেকে ওকে বা কনফার্ম না করলে দূতাবাস থেকেও কিছুই করার থাকে না। অনেক সময় সার্ভার কাজ করে না। এসব নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে সদস্য প্রত্যাশীরা হতাশ হয়ে যায়। কারণ একটি কাজের জন্য বারবার দূতাবাসে আসা কর্মীর পক্ষে সম্ভব না।

দুই দেশের মধ্যে চুক্তি এবং নিয়োগ চুক্তি অনুযায়ী কর্মীদের সীমিত গণ্ডির মধ্যে নিয়োগকর্তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে কর্মীকে অবস্থান করতে হয় তাই কর্মীর সম্পর্কে ডাটা বেজ এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্মী অভিবাসন ও কল্যাণ নীতিমালা, সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা বিএমইটিতে নিবন্ধিত (অর্থাৎ ওয়েজ বোর্ডের সদস্য হয়েছে) কর্মীদের তথ্যাদি অর্থাৎ কর্মীর, নাম ঠিকানা, রিক্রুটিং এজেন্টের তথ্য, নিয়োগকর্তার তথ্য, ইত্যাদি দূতাবাসের কাছে পাঠানোর নির্দেশনা থাকলেও প্রেরণ করে না বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

চোখ লাফানোও হতে পারে মারাত্মক অসুখ

প্রবাসী সুরক্ষা বূহ্য : ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড

আপডেট টাইম : 08:11:32 am, Saturday, 20 May 2023

প্রবাস ডেস্ক: ব্রিটিশ আমল থেকেই দেশের জনশক্তি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে বিশাল জনশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে সরকার তৎপর হয় এবং এই প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয় জনশক্তি রপ্তানি। কালক্রমে বিশ্বচাহিদার প্রেক্ষিতে সাধারণকর্মী হিসেবে বাংলাদেশের জনশক্তি পাঠায়।

সবুজ কভারে মোড়া পাসপোর্টধারীরা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের ১৭৬টি দেশে। ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী তাদের মেধা, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠতা দিয়ে সে দেশ এবং নিজ দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির চাকা ঈর্ষণীয়ভাবে সচল রাখতে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ৬৩ শতাংশ ব্যয় হয় দৈনন্দিন খরচের খাতে। রেমিট্যান্স পাওয়ার পরে একটি পরিবারের আয় পূর্বের তুলনায় ৮২ শতাংশ বাড়ে। তাছাড়া প্রবাসীদের পরিবার-পরিজন অধিকাংশ গ্রামে বসবাস করার ফলে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয় ও সঞ্চয় বাড়ার কারণে গ্রামীণ অর্থনীতির কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বাড়ে বহুলাংশে।

প্রবাসী কর্মীদের এ অবদানের বিষয়টি বিবেচনা করে তৎকালীন সরকার ইমিগ্র্যাশন অর্ডিন্যাস-১৯৮২ এর ১৯ (১) ধারার ক্ষমতাবলে ১৯৯০ সালে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিল গঠন করে। ফলে ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০১৮’ এর মাধ্যমে ‘ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড’ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পূর্বে এটি অতিপুরাতন সংস্থা জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোয় (বিএমইটি) সীমিত আকারে প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে কাজ করে।

আলাদা করে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড গঠন করার ফলে প্রবাসী কর্মী ও তার পরিবারের বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির পথ সুগম হয়। একই সঙ্গে এই ওয়েজ বোর্ডের অধীনে বাংলাদেশের কর্মী অধ্যুষিত দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে কল্যাণ সহকারী এবং আইন সহকারী নিয়োগ করা হয়েছে। অনেক মিশনে গাড়ি এবং কর্মীদের জন্য হোস্টেল বা শেল্টার হাউজ পরিচালনা করছে।

দেশের বিমান বন্দরগুলোতে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক স্থাপন ও কর্মী নিয়োগ করে কেবল বিদেশগামী ও ফেরত কর্মীদের সেবা দিচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কাছে দূরদূরান্তের কর্মীদের সাময়িক অবস্থানের জন্য হোস্টেল চালু করেছে।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সুবিধা পেতে কোন দেশে নিশ্চিত কাজ নিয়ে গমন করার পূর্বে সরকারের অনুমোদন পাবার শর্ত হিসেবে দেশ ত্যাগের আগেই এই বোর্ডের সদস্য হতে হয়। অর্থাৎ এই বোর্ডের সদস্য না হয়ে কেউ বহির্গমন অনুমোদন পাবে না, ইমিগ্রেশন দেশ ত্যাগের অনুমোদন দেবে না।

তবে ভিজিট ভিসা বা ট্যুরিস্ট ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা বা মেডিকেল ভিসা বা অন্যকোনো ভিসা নিয়ে কোনো দেশে যাওয়ার পর থেকে যাওয়া এবং অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করে অবস্থান করা বাংলাদেশের নাগরিকদের সে দেশে কাজ করার বৈধতা পেলে তাদেরও ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ দিয়েছে সরকার।

অর্থাৎ বৈধভাবে কর্মীভিসা নিয়ে দেশ থেকে রওয়ানা দেওয়ার আগে এবং কোন দেশে গিয়ে বৈধভাবে কর্মী ভিসা পেলে এই বোর্ডের সদস্য হওয়া যায়।

এভাবে সদস্য পদ গ্রহণকারী প্রবাসী কর্মীরা তাদের মেধাবী সন্তানদের জন্য প্রতি বছর বোর্ড থেকে শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছেন। প্রবাসীদের সন্তানরা বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবাসী কোটায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন।

প্রবাসে মৃত্যু হলে মরদেহ দেশে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছেন। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় বিমানবন্দরে মরদেহ পরিবহন ও দাফন খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পাচ্ছেন।

প্রবাসে মৃত্যু হলে মৃত কর্মীর নমিনি বা পরিবারকে তিন লাখ টাকা আর্থিক অনুদান, পুনর্বাসন ঋণসহ আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এছাড়াও অসুস্থ প্রবাসী কর্মী দেশে ফেরত এলে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে। প্রবাসী কর্মী এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষা ও মানসম্পন্ন সেবা দেওয়া, তাদের আস্থা অর্জন, মৃত কর্মীদের মরদেহ দেশে আনা, ব্যয় নির্বাহ অর্থ দিয়ে থাকে।

অধুনা দেশে প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাস পল্লী নামক আবাসন সুবিধা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ড। ফলে বিদেশে বসেই দেশে সুন্দর পরিবেশ ও সুবিধা সংবলিত আবাসন নিশ্চিত করতে পারবে।

এছাড়াও প্রবাসফেরত দক্ষ কর্মীদের দক্ষতা কাজে লাগানোর জন্য বিশেষ রিইন্টিগ্রেশন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কল্যাণ বোর্ড। তাছাড়া, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০১০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৫১০ জন আহত ও অসুস্থ প্রবাসীকে দেশে ফেরত আনয়ন ও চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে ১৪৪.২৩ মিলিয়ন টাকা।

১৯৭৭ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ২২২৯০ জন প্রবাসীদের মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ, বিমা সার্ভিস বেনিফিটি ইত্যাদি বাবদ টাকা বিতরণ করা হয়েছে ৮৪১৫.১১ মিলিয়ন টাকা। ২০২১-২০২২ পর্যন্ত প্রবাসীর মোট ৭৩০ জন স্পেশাল সন্তানদের ভাতা দেওয়া হয়েছে ৮.৭৬ মিলিয়ন টাকা। ১৯৯৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৪৮,৩১১ জন মৃত প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে ৩ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে মোট ১৩,১১৩ মিলিয়ন টাকা।

এছাড়া ১৯৯৩ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ৪৭,৮০২ জন প্রবাসে মৃত কর্মীর দেহ পরিবহন ও দাফন খরচ বাবদ ৩৫ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে ১৫১৯.৯৩ মিলিয়ন টাকা এবং এরই মধ্যে ২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত মোট ২৩,৮৪৭ জন প্রবাসী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে ৩৯৮.৪৪ মিলিয়ন টাকা।

সেদিক বিবেচনা করে এ কথা বলা যায় যে, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড দিনে দিনে প্রবাসী কর্মীর সুরক্ষা বূহ্য হয়ে উঠছে। যারা দেশ ত্যাগ করার আগেই কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হয়ে বিদেশে কাজে নিয়োজিত আছে তাদের পুনরায় সদস্য হবার কোনো প্রয়োজন নেই। যে পাসপোর্ট দিয়ে সদস্য হয়েছিল সে পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন কার্ড সংরক্ষণ করলেই হবে। কারণ কর্মী সদস্য কি না যাচাইয়ের জন্য দরকার হবে।

তবে যারা কর্মী ভিসা ব্যতীত বিভিন্ন ভিসা নিয়ে বা অবৈধভাবে কোনো দেশে প্রবেশ করে এবং পরে বৈধতা পায় তাদের কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হতে হবে দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ শাখার মাধ্যমে। এই সুযোগ প্রথম শুরু হয় ২০১৯ সালে কুয়ালালামপুর থেকে তৎকালীন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনের পর থেকে সদস্য সংগ্রহের হার খুব কম বলে ওয়েজ বোর্ডের মাধ্যেমে জানা গেছে। সদস্য সংগ্রহের জন্য লিফলেট বিতরণ করে, বিভিন্ন এলাকায় সভা করে এবং প্রচারনা অব্যাহত রাখে। কোনো দেশ অবৈধ কর্মীদের বৈধতা পাঠালেই যে সে কর্মীকে ওয়েজ বোর্ডের সদস্য হতে হবে এমন নয়, কারণ অনেক বৈধ কর্মী যিনি ওয়েজ বোর্ডের সদস্য কিন্তু কোন কারণে অবৈধ হয়েছেন এবং বৈধতা পেয়েছেন তাকে পুনরায় সদস্য হতে হবে না। এ কারণে বৈধকরণ কর্মসূচি হলেই যে সদস্য বৃদ্ধি পাবে এমন নয় বরং যারা কখনোই ওয়েজ বোর্ডের সদস্য ছিল না বৈধতাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে কেবল তারাই সদস্য হতে পারবে এবং হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হওয়া এবং এ বোর্ডের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অধিকাংশ প্রবাসীর ধারণা স্পষ্ট নাই। একই সাথে মালয়েশিয়ান সরকারের দেওয়া নানান সুবিধা সম্পর্কেও অনেকের ধারণা নেই। যেমন বাংলাদেশের কোনো বৈধ কর্মী মালয়েশিয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গু হলে, অঙ্গহানি হলে বা মৃত্যু হলে দেশে থেকেও নিজে ও পরিবার আজীবন মালয়েশিয়া সরকারের সুবিধা পাবে, এসব সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের ওয়েজ বোর্ডের সাথে সেদেশের সোশ্যাল সিকিউরিটি সংস্থার সাথে চুক্তি করা খুবই জরুরি। দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ প্রান্তে ঝুলে আছে। কল্যাণ বোর্ড তৎপর হলে কর্মীর আজীবন সুবিধাপ্রাপ্ত নিশ্চিত হবে।

বিগত সময়ে মালয়েশিয়া সরকার অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পেরেছে এবং কর্মী ভিসা ব্যতীত আগমন বন্ধ করায় অবৈধভাবে অবস্থান করা এবং পরবর্তীতে বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বরং দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। মালয়েশিয়া সরকারের পলিসি অনুযায়ী সে দেশে অবৈধভাবে কোনো কর্মী অবস্থান করতে পারবে না। তাই অনুপ্রবেশ করে পূর্বে সিক্স পি, থ্রি প্লাস ওয়ান এর সুযোগে বৈধতা পেয়েছে তাদের কেবল সদস্য হবার সুযোগ আছে। স্টুডেন্ট ভিসা শেষে কর্মী ভিসায় যারা অবস্থান করছে তাদেরও সুযোগ আছে সদস্য হওয়ার।

এদের মধ্যে অনেকে সদস্য হয়েছে তবে অধিকাংশ সদস্য হয়নি। কারণ মালয়েশিয়ায় কর্মীদের ভিসা প্রাপ্তি, কাজ ও অবস্থান করার পদ্ধতি অনুযায়ী কর্মীদের অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। যদি না নিয়োগকর্তা বা এজেন্ট সুযোগ দেয়। তাই নিয়োগকর্তা ও এজেন্টকে বুঝিয়ে সদস্য সংগ্রহ করার কোনো বিকল্প নেই।

অন্যদিকে সদস্য হওয়ার যে প্রক্রিয়া সেটি জটিল ও কঠিন যা সাধারণ কর্মীর পক্ষে করা সম্ভব নয়। সদস্য হওয়ার জন্য নানান ধরনের তথ্য দিতে হয় এসব তথ্য অনলাইনে কম্পিউটারে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের মালিকানাধীন রেমিট্যান্স হাউজগুলো প্রচার করে কিন্তু সদস্যভুক্তির কাজে তাদের সহযোগিতা নিতে পারে।

অনেক সময় বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে তথ্য দিলেও ঢাকা ওয়েজ বোর্ডের হেড অফিস থেকে ওকে বা কনফার্ম না করলে দূতাবাস থেকেও কিছুই করার থাকে না। অনেক সময় সার্ভার কাজ করে না। এসব নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে সদস্য প্রত্যাশীরা হতাশ হয়ে যায়। কারণ একটি কাজের জন্য বারবার দূতাবাসে আসা কর্মীর পক্ষে সম্ভব না।

দুই দেশের মধ্যে চুক্তি এবং নিয়োগ চুক্তি অনুযায়ী কর্মীদের সীমিত গণ্ডির মধ্যে নিয়োগকর্তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে কর্মীকে অবস্থান করতে হয় তাই কর্মীর সম্পর্কে ডাটা বেজ এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কর্মী অভিবাসন ও কল্যাণ নীতিমালা, সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিমালা বিএমইটিতে নিবন্ধিত (অর্থাৎ ওয়েজ বোর্ডের সদস্য হয়েছে) কর্মীদের তথ্যাদি অর্থাৎ কর্মীর, নাম ঠিকানা, রিক্রুটিং এজেন্টের তথ্য, নিয়োগকর্তার তথ্য, ইত্যাদি দূতাবাসের কাছে পাঠানোর নির্দেশনা থাকলেও প্রেরণ করে না বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে।