মালয়েশিয়া ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় বৈদেশিক শ্রম কোটা অনুমোদনের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্তের পর মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডিজিসহ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ মে) দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশ করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর মধ্যে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক আসরি এবি রহমানও রয়েছেন; যাদের মন্ত্রণালয়ে প্রজ্ঞাপন জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদলি করা হবে। পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল অব অপারেশনস মুহাম্মদ খায়ের রাজমান মোহাম্মদ আনোয়ারকেও বদলির আদেশ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২২ মে) মুহাম্মদ খায়ের রাজমান মোহাম্মদ আনোয়ারের স্থলাভিষিক্ত হবেন জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বিভাগের মহাপরিচালক নরিসন রামলি। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নবনিযুক্ত সেক্রেটারি জেনারেল জাইনি উজাংয়ের নির্দেশে দ্রুত এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক মাস ধরে কাজ না পাওয়া আটকেপড়া বিদেশি কর্মীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার মধ্যেই গত মাসের এপ্রিলে নিজের পদ গ্রহণ করা জাইনি আগামী দিনগুলোতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, জাইনির তদন্তে বেশ কয়েকজন নিম্নপদস্থ কর্মীর নামও উঠে এসেছে যারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নিলাম করেছিলেন এবং যারা আদেশ দিয়েছিলেন তাদের নাম জানাতে তারা এগিয়ে এসেছেন।
এদিকে মালয়েশিয়ায় গত চার মাস আগে বাংলাদেশ থেকে শতাধিক কর্মী বৈধভাবে ভিসা নিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করলেও নিয়োগকর্তাদের অবহেলায় এখনও কর্মহীন হয়ে পড়ে আছে এসব প্রবাসী বাংলাদেশি। সোমবার (১৫ মে) সকালের দিকে এসব বাংলাদেশি কর্মী চাকরি পাওয়ার দাবিতে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনে জড়ো হন।
সেখানে তারা জানান, মালয়েশিয়ায় পৌঁছার পর থেকে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের বেতন-ভাতা পাননি। তাদের যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে বসবাসের কোনো পরিস্থিতি নেই এমনকি দুবেলা খাবার খাওয়ার টাকাও নেই বলে জানিয়েছেন তারা।
এরপর গত মঙ্গলবার (১৬ মে) শ্রম বিভাগের বরাত দিয়ে দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করে মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগের হস্তক্ষেপে নতুন করে ১২০ জন ভুক্তভোগী বাংলাদেশি চাকরি পেয়েছেন। এসব বাংলাদেশি কর্মীদের ন্যূনতম মজুরি অনুযায়ী একটি নতুন সংস্থা এসব শ্রমিকদের কর্মী হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।
তবে ভুক্তভোগী বাংলাদেশিরা সময় সংবাদকে জানায়, চার দিন পার হয়ে গেলেও হতাশাগ্রস্ত ১২০ বাংলাদেশি কর্মীদের কেউ এখনও কাজে যোগ দিতে পারেনি। এমনকি তাদের নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত তাদের কাজের বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার গেন্টিং হাইল্যান্ডসে গৃহকর্মী হিসেবে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে চারটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে প্রায় ৬০০ বাংলাদেশি কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির শ্রম দফতর থেকে জানানো হয়, যেসব বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়ায় আসার পর তাদের নিয়োগকর্তার অবহেলায় চাকরি না পেয়ে এখনও আটকে পড়ে আছে তাদের নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়।