প্রবাস ডেস্ক: যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি অভিবাসনের লাগাম টেনে ধরার কথা বললেও, আগামী বছর মৌসুমী শ্রমিকদের জন্য ৪৫ হাজার কৃষিকর্মী ভিসা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
ব্রিটিশ সরকারের দেওয়া এক ঘোষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির সময়ে অনিয়মিত অভিবাসন কমে এলেও, সম্প্রতি তা আবার বেড়েছে। কৃষিখাতকে আরও শক্তিশালী করতে নেওয়া প্যাকেজের অংশ হিসেবে ৪৫ হাজার ভিসা ইস্যু করার সিদ্ধান্তটি এসেছে।
লন্ডনে এক সম্মেলনে কট্টরপন্থি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেছেন, অভিবাসন কমানোর জন্য ব্রিটেন তার নিজস্ব লরিচালক এবং জমি থেকে ফল সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারবে না, ‘এটা ভালো কোনো যুক্তি’ নয়। তবে ডাউনিং স্ট্রিটের অবস্থান ভিসা দেওয়ার পক্ষে।’
‘ঐতিহাসিকভাবেই ব্রিটেনে বেকারত্বের হার কম জানিয়ে মঙ্গলবার দেশটির সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, বর্তমান নিয়মগুলো ‘‘যুক্তরাজ্যের প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করে আমাদের ব্যবস্থাপনাকে শিথিল করার সুযোগ দেয়।’
করোনাভাইরাস মহামারির পর, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সরবরাহ ভেঙে পড়ায় দাম বেড়েছে সার, খাদ্য, জ্বালানির। আর তাতে চাপের মুখে রয়েছেন ব্রিটিশ কৃষকেরা।
ব্রেক্সিটের পর নেওয়া কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অবাধ যাতায়াত বন্ধ হওয়ার কারণে, জোটভুক্ত দেশগুলোতে থেকে কর্মী নিয়োগ করাও কঠিন হয়েছে যুক্তরাজ্যের জন্য। কিন্তু ঐতিহ্যগতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মীদের ওপর নির্ভর করত ব্রিটেনের কৃষিখাত। এমনকি, আমদানি পণ্যের প্রতিযোগিতার মুখেও পড়েছে দেশটির কৃষি শিল্প।
কৃষিকে উৎসাহিত করতে ইউকে ফার্ম টু ফর্ক সামিট আয়োজন করতে যাচ্ছে ডাউনিং স্ট্রিট। তার আগে মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের বাণিজ্য চুক্তিতে কৃষকদের আরও বেশি সুরক্ষা দেবে এবং নতুন রপ্তানি সুযোগকে অগ্রাধিকার দেবে।
ব্রিটিশ কৃষকদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, ‘ব্রিটিশ কৃষি এবং ব্রিটিশ পণ্য শুধু একটি চিন্তাভাবনার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আমি জানি, আপনাদের মধ্যে অনেকে এমন কথা আগেও ভেবেছেন।’
গেলো ফেব্রুয়ারিতে ‘নতুন প্রযুক্তির বিকাশ এবং উদ্ভাবনী কৃষিকে এগিয়ে নিতে’ চলতি বছর কৃষকদের জন্য ১৬৮ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি অনুদান ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
তবে কোন দেশ থেকে কতজন লোক নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো স্পষ্ট করে কিছু বলেনি ব্রিটিশ সরকার।