মালয়েশিয়া ডেস্ক: মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেয়া ভারতের ধর্ম প্রচারক জাকির নায়েককে কটূক্তি করার অভিযোগে ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য চার্লস অ্যান্থনি সান্তিয়াগোর বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির মামলায় তাকে জাকির নায়েকের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি দাতুক আখতার তাহির। এর মধ্য দিয়ে গত চার বছরের বিরোধের অবসান হলো।
স্থানীয় সময় সোমবার (২২ মে) কুয়ালালামপুরে উচ্চ আদালতের শুনানির সময় রায় পাঠের পরপরই বিচারক চার্লসকে আদালতে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। চার্লসের ক্ষমা চাওয়ার পর বিচারক জাকির নায়েককে জিজ্ঞেস করেন তিনি ক্ষমা প্রার্থণা গ্রহণ করেছেন কিনা। উত্তরে জাকির নায়েক হ্যাঁ বলে সান্তিয়াগোর ক্ষমা প্রার্থণা গ্রহণ করেন।
বিচারপতি আখতার তার রায়ে বলেন, ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলাম (এলটিটিই) শিরোনামে এক বক্তৃতায় সান্তিয়াগোর দেয়া দ্বিতীয় বক্তব্যে জাকির নায়েককে অপমান (কটূক্তি) করা হয়। আদালত এই মন্তব্যকে সান্তিয়াগোর মতামতের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করলেও এটি অনুমানমূলক প্রকৃতির এবং জাকিরের বিরুদ্ধে মানহানিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।
এদিকে, জাকির নায়েককে মালয়েশিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়া নিয়ে দেশটির তৎকালীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিন মন্ত্রী জাকির নায়েককে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছিলেন। মালয়েশিয়ার ওই তিন মন্ত্রী জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে জাতি বিদ্বেষের অভিযোগও আনেন।
এরপর জাকির নায়েক এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, আমার মন্তব্যকে প্রেক্ষাপটের বাইরে গিয়ে নেয়া হয়েছে। বক্তব্যকে অদ্ভুতভাবে বিকৃত করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা সম্প্রদায়কে আঘাত করার অভিপ্রায় ছিল না আমার। ইসলামী চিন্তদর্শনের সঙ্গে এটি যায় না। ভুল বোঝাবুঝির জন্য তিনি সবার কাছে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডা. জাকির নায়েককে প্রায় ১০ ঘণ্টা আটকে রাখে মালয়েশীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এরপর মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ জাকির নায়েকের ইসলাম প্রচারে বাঁধা না দিলেও, মালয়েশিয়ার বর্ণবাদ ইস্যুতে তাকে বক্তব্য না দিতে অনুরোধ জানান। যদিও দেশটির সাত প্রদেশে প্রকাশ্যে বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে জাকির নায়েকের ওপর নিষোধাজ্ঞা রয়েছে।