Dhaka , Saturday, 3 June 2023

৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে এডিবি

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:32:21 am, Friday, 26 May 2023
  • 14 বার

নিউজ ডেস্ক: সরকার প্রতিবছর যে বাজেট ঘোষণা করে, তার পুরোটা দেশীয় উৎস থেকে মেটানো সম্ভব হয় না। নির্ভরশীল হতে হয় বৈদেশিক ঋণের বাজেট সহায়তার জন্য। অভ্যন্তরীণ উৎসে সম্পদ অর্জন ও রাজস্ব আয় কম হওয়ায় বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেয় সরকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে শেষের দিকে এসেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এ অর্থবছরে বাজেট সহায়তায় ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বাজেট সহায়তার ঋণচুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রমান্বয়ে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তহবিল বাড়াতে সহায়তা করবে এডিবির বাজেট সহায়তা।

গত ২৪ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের এ অর্থ সাড়ে ৩ মাসের আমদানি সুরক্ষিত করার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া বাজেট সহায়তা যোগ হওয়ার পর এ রিজার্ভ বেড়েছিল বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ অর্থবছরে (২০২২-২৩) ক্রমাগত ভঙ্গুর অর্থনীতি সামাল দিতে এ বাজেট সহায়তা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দাতা সংস্থা ও দেশগুলো সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ দেয়। এ ধরনের অর্থসহায়তা পেতে নির্দিষ্ট একটি প্রকল্প তৈরি করতে হয়। এরপর ওই প্রকল্প ধরে দাতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি চলে। কিন্তু বাজেট সহায়তার অর্থ দিয়ে সরকার নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে না। বাজেট সহায়তার অর্থ সরকার যেকোনো খাতে খরচ করতে পারে। তাই অর্থনীতির চাপ সামলাতে বাজেট সহায়তার অর্থ নেওয়া সরকারের জন্য বেশি সুবিধাজনক। তবে এ জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।

এডিবির সঙ্গে এখন বাজেট সহায়তার যে দর-কষাকষি হয়েছে, তাতে বেশকিছু শর্ত রয়েছে। যেমন ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, জ্বালানির দাম নির্ধারণ, ভর্তুকিসহ বিভিন্ন খাতে নীতি সংস্কার আনতে হবে। এসব শর্ত কতটা বাস্তবায়িত হলো, তা নিয়মিত নজরে রাখবে এডিবি। বাজেট সহায়তার জন্য কোনো খাত দেখাতে না হলেও এডিবিকে বাজেট সহায়তার অর্থের খরচের খাত জানাতে হয়। এবার যে ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, তা সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে খরচ করতে চায় বলে জানা গেছে।

এর আগে এডিবির নেতৃত্বে কো-ফান্ডিং উদ্যোগের মাধ্যমে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পেয়েছে। এ বাজেট সহায়তা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ কমাবে। দুই ধাপে এই তহবিল বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। প্রথম ধাপে এপ্রিলে এক দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার এসেছে দেশে। আগামী জুনে আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলার আসার কথা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ সরকারকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দিয়েছে এডিবি। বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি বিদ্যুৎ, শিক্ষা, পরিবহন, জ্বালানি, পানিসম্পদ, কৃষি, স্থানীয় সরকার, সুশাসন, আর্থিক ও বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দেয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দিচ্ছে এডিবি

আপডেট টাইম : 08:32:21 am, Friday, 26 May 2023

নিউজ ডেস্ক: সরকার প্রতিবছর যে বাজেট ঘোষণা করে, তার পুরোটা দেশীয় উৎস থেকে মেটানো সম্ভব হয় না। নির্ভরশীল হতে হয় বৈদেশিক ঋণের বাজেট সহায়তার জন্য। অভ্যন্তরীণ উৎসে সম্পদ অর্জন ও রাজস্ব আয় কম হওয়ায় বিদেশি ঋণদাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ঋণ নেয় সরকার। চলতি অর্থবছরের বাজেটে শেষের দিকে এসেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এ অর্থবছরে বাজেট সহায়তায় ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বাজেট সহায়তার ঋণচুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রমান্বয়ে কমতে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের তহবিল বাড়াতে সহায়তা করবে এডিবির বাজেট সহায়তা।

গত ২৪ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের এ অর্থ সাড়ে ৩ মাসের আমদানি সুরক্ষিত করার জন্য যথেষ্ট। বিশ্বব্যাংকের দেওয়া বাজেট সহায়তা যোগ হওয়ার পর এ রিজার্ভ বেড়েছিল বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ অর্থবছরে (২০২২-২৩) ক্রমাগত ভঙ্গুর অর্থনীতি সামাল দিতে এ বাজেট সহায়তা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দাতা সংস্থা ও দেশগুলো সাধারণত উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে অর্থ দেয়। এ ধরনের অর্থসহায়তা পেতে নির্দিষ্ট একটি প্রকল্প তৈরি করতে হয়। এরপর ওই প্রকল্প ধরে দাতাদের সঙ্গে দর-কষাকষি চলে। কিন্তু বাজেট সহায়তার অর্থ দিয়ে সরকার নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে না। বাজেট সহায়তার অর্থ সরকার যেকোনো খাতে খরচ করতে পারে। তাই অর্থনীতির চাপ সামলাতে বাজেট সহায়তার অর্থ নেওয়া সরকারের জন্য বেশি সুবিধাজনক। তবে এ জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।

এডিবির সঙ্গে এখন বাজেট সহায়তার যে দর-কষাকষি হয়েছে, তাতে বেশকিছু শর্ত রয়েছে। যেমন ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন, জ্বালানির দাম নির্ধারণ, ভর্তুকিসহ বিভিন্ন খাতে নীতি সংস্কার আনতে হবে। এসব শর্ত কতটা বাস্তবায়িত হলো, তা নিয়মিত নজরে রাখবে এডিবি। বাজেট সহায়তার জন্য কোনো খাত দেখাতে না হলেও এডিবিকে বাজেট সহায়তার অর্থের খরচের খাত জানাতে হয়। এবার যে ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, তা সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে খরচ করতে চায় বলে জানা গেছে।

এর আগে এডিবির নেতৃত্বে কো-ফান্ডিং উদ্যোগের মাধ্যমে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পেয়েছে। এ বাজেট সহায়তা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ কমাবে। দুই ধাপে এই তহবিল বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। প্রথম ধাপে এপ্রিলে এক দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার এসেছে দেশে। আগামী জুনে আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলার আসার কথা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বাংলাদেশ সরকারকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ঋণ দিয়েছে এডিবি। বাংলাদেশে উন্নয়ন সহায়তার ক্ষেত্রে এডিবি বিদ্যুৎ, শিক্ষা, পরিবহন, জ্বালানি, পানিসম্পদ, কৃষি, স্থানীয় সরকার, সুশাসন, আর্থিক ও বেসরকারি খাতকে প্রাধান্য দেয়।