নিউজ ডেস্ক: কয়লা সংকটে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটো ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং বাড়তে শুরু করে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে ঘাটতি পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী ২৩ জুন থেকে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। জাতীয় গ্রিডে নতুন করে আরও বিদ্যুৎ আসবে। যার ফলে লোডশেডিং কমে আসবে।
একটি সংবাদমাধ্যমের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
লোডশেডিং কেন বাড়লো আর উৎপাদন কমার প্রশ্নে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমরা বিগত ৬ মাস ধরে ডেফার্ড পেমেন্টে কয়লা ক্রয় করছিলাম। কারণ আমাদের হাতে ডলার ছিলো না। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা যখন শেষ হয়ে আসছিলো তখন বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এলসি খোলার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে নতুন করে এলসি খোলা যায়নি। যার ফলে কয়লা সংকটের কারণে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলেও আমাদের তো অন্য বিকল্প পথে উৎপাদন করা সম্ভব ছিল, কিন্তু আমরা সেটাও পারলাম না কেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তেল কিনতেও ডলার প্রয়োজন, গ্যাস কিনতেও। ডলার সংকটের কারণে আমরা বিকল্প পথে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারিনি। কিন্তু সেটাও খুব দ্রুত সমাধান হচ্ছে।
এরকম লোডশেডিং আর কতদিন চলবে এমন প্রশ্নের জবাবে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, পায়রার বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলেও লোডশেডিং কিন্তু বাড়েনি।
আগামী সপ্তাহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী ১২ জুন পর্যন্ত লোডশেডিং কমাতে না পারলেও বাড়বে না। গত পরশু আমাদের উৎপাদন ছিলো সর্বোচ্চ ১৩৭৮১ মেগাওয়াট। পায়রা বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পর গতকাল রাতে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো ১৩৮৫৯ মেগাওয়াট। আমরা কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি, কমায়নি। আজ আমাদের উৎপাদন ছিলো ১২০৪৪ মেগাওয়াট যেটা গতকাল ছিলো ১২০২৮ মেগাওয়াট। আর পায়রার উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আগে ছিলো ১২০০৬ মেগাওয়াট।
তিনি জানান, আগামী ১৩ জুন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়বে। কারণ এই সময়ের মধ্যে আরও কয়েকটি বিদ্যুৎ প্লান্ট থেকে আমরা বিদ্যুৎ পাবো। যার কারণে এই সময়ে লোডশেডিং অনেকাংশে কমে আসবে। আগামী ২২ জুন থেকে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদন আসবে। আদানী থেকেও আমরা পূর্ণ ক্ষমতার বিদ্যুৎ পাবো। আগামী ২৩ জুন থেকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের জুলাই মাসে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো বন্ধ করার ফলে তখন প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হয়।