Dhaka , Tuesday, 19 March 2024

১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি : প্রধানমন্ত্রী

  • Robiul Islam
  • আপডেট টাইম : 08:06:41 am, Thursday, 8 June 2023
  • 40 বার

নিউজ ডেস্ক: আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেওয়া বিদ্যুতে, ইন্টারনেটে, এসি রুমে বসে আমাদেরই সমালোচনা করা হয়। আমরা জানি কখন কোন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কখন কোন কথা বলতে হয়। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির (বিদ্যুৎ) উন্নতি হবে। অতিরিক্ত গরমে মানুষের কষ্ট বুঝতে পারছি আমরা।’

আওয়ামী লীগ সরকারের দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের সাফল্য তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি, দুর্ভাগ্য আমাদের, করোনাভাইরাস, ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ তিনটা বছর সব কিছু বন্ধ ছিল, অর্থনীতির চাকা স্থবির ছিল, উন্নত দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে, স্যাংশন পাল্টা স্যাংশনে প্রত্যকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেল। এ জাহাজে এলো কেন? ওই জাহাজে এলো কেন? এটা ভিড়তে দেবে না, ওটা ভিড়তে দেবে না; শুধু দেশের ওপর স্যাংশন নয়, জাহাজের ওপরেরও স্যাংশন দিয়ে বসে আছে আমেরিকা। ফলে প্রত্যেকটা দেশে আজকে মুদ্রাস্ফীতি।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হচ্ছে আমরা জানি, তারপরও আমরা বারবার চেষ্টা করছি মানুষের কষ্ট কীভাবে কমানো যায়। এই কষ্ট শুধু আমাদের একা না, সারা বিশ্বব্যাপী। বৈশ্বিক কারণেই কষ্ট। বাংলাদেশকে আমরা সুন্দরভাবে রেখেছিলাম, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছিলাম, মানুষের খাবার আছে।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেয় তখন আমি একটা কথা বলেছিলাম, আল্লাহতালা জন বুঝে ধন দেয়, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে গ্যাস একটু পাবেও না, দিতেও পারবে না। সত্যিই কিন্তু দিতে পারে নাই। যে ক’টা কূপ খনন করছে সবগুলো শুকনা। কোনো গ্যাস পায়নি, যারা কিনতে চেয়েছিল তারাও নিতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে, খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করেছিল, কত ভোট পড়েছিল? ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়েনি? অথচ ঘোষণা দিলেন তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ এখন তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। সেই সচেতনতা আমরা চেষ্টা করেছি। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট চুরি করেছিল বলেই দেশে মানুষ ফুঁসে উঠেছিল। আন্দোলন করেছিল। আন্দোলনের খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে। ভোট চুরি যারা করেছিল তাদের মুখে যখন ভোটের কথা শুনি, গণতন্ত্রের কথা শুনি, মিলিটারি ডিটেকটেড পকেট থেকে বের হওয়া রাজনৈতিক দলের কাছে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। তাদের পারদর্শিতা কী এ দেশের মানুষ দেখেছে।’

২০০১ সালের নির্বাচনে কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ সবসময়ই জয়ী হয়েছে, জনগণ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ কখনো পরাজিত হয় নাই। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটে এসেছে, তার বাইরে কোনোভাবে ক্ষমতায় আসে নাই। আজকে তারা বলেন ‘ভোটারবিহীন’। কে ভোটার বিহীন? ভোটারনবিহীন তো ছিল খালেদা জিয়া, ভোটারবিহীন ছিল জিয়াউর রহমান, ভোটারবিহীন ছিল এরশাদ- এটা তারা ভুলে গেছে? তারা তো ভোটারবিহীন হিসেবে ক্ষমতা দখল করেছে। ২০০১ সালে আমাদের সম্পদ গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। কই আমি তো দেখি নাই? আমি বলেছিলাম দেশের সম্পদ দেশের মানুষ ব্যবহার করবে, আগে তাদের স্বার্থ দেখবো, তাদের জন্য আমরা গ্যাস ব্যয় করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে, আমাদের উৎখাত করবে, একদিকে ভালো হয়েছে, এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও করে, এখন যদি অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন যদি মানুষ খুন করে, আমেরিকার ভিসা পাবে না। যাদের কথায় নাচে, তারাই খাবে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। ওটা (ভিসানীতি) নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নাই।’

তিনি বলেন, ‘তারা কিছু লোক জোগাড় করে আন্দোলন করবে, করতে দাও। আমি বলে দিয়েছি, যত আন্দোলন করার করুক, আমি কিছু বলবো না। নজর রাখতে হবে যে, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ বা তার পরবর্তী সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে মানুষকে পুড়ে মেরেছে, হাত পা কেটেছে, সেটা যেন করতে না পারে।’

কোনো চাপের কাছে দেশের মানুষ নতি স্বীকার করে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশি-বিদেশি যতই চাপ শোনান না কেন, সেই চাপের কাছে বাংলাদেশিরা নতি স্বীকার করে না। আমার দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আমরা সুরক্ষিত করব। আমরা এ দেশে আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্র এনেছি। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলে আজকে বাংলাদেশে উন্নত হয়েছে। আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে।’

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারপরও খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের বাইরেও রপ্তানি করতে পারব। পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গার্মেন্টসের ওপর নির্ভর করে থাকব না। আমরা আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এই ডিজিটাল ডিভাইস আমরা তৈরি করব। ইতোমধ্যে অনেক বিনিয়োগ আসছে। একশটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ আসছে। আইসিটি, ডিজিটাল ডিভাইস এগুলো উৎপাদন করে আমরা রপ্তানি করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী আছে, যারা বুদ্ধি বেঁচে জীবিকা নির্বাহ করেন। বুদ্ধিজীবী। আমি বিদ্যুৎ দিয়েছি, তারা এয়ারকন্ডিশন রুমে বসে বক্তৃতা দেয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নেয়। প্রাইভেট টেলিভিশনও আওয়ামী লীগ সরকারই দিয়েছে। সেই টেলিভিশনের টক শোতে এসে আলোচনা করে- এই বাজেট আওয়ামী লীগ কোনো দিনও কার্যকর করতে পারবে না। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, করতে পারব সেটা বুঝেশুনে আমরা বাজেট দিয়েছি। আমরা যা দিয়েছি আমরা তা করতে পারব।’

ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বাংলার মানুষের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ছয় দফা দিয়েছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর এদশের সারমিক শাসন শুরু হয় এবং গণতন্ত্রকে কবর দেয়া হয়। মার্শাল ল জারি করে রাতে কারফিউ দিয়ে বছরের পর বছর এ দেশের মানুষের ওপর শোষণ চলে, নির্যাতন চলে। অথচ জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীনই করেছিলেন এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, অধিকার আদায়ের জন্য, দেশের মানুষকে একটি উন্নত জীবন দেয়ার জন্য। পাকিস্তান আমল থেকেই আমরা বঞ্চিত। এই বঞ্চিত মানুষগুলো ভাগ্য গড়তে জাতির পিতা ৬ দফা দেন।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

জনপ্রিয় সংবাদ

১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : 08:06:41 am, Thursday, 8 June 2023

নিউজ ডেস্ক: আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেওয়া বিদ্যুতে, ইন্টারনেটে, এসি রুমে বসে আমাদেরই সমালোচনা করা হয়। আমরা জানি কখন কোন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কখন কোন কথা বলতে হয়। ১০-১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির (বিদ্যুৎ) উন্নতি হবে। অতিরিক্ত গরমে মানুষের কষ্ট বুঝতে পারছি আমরা।’

আওয়ামী লীগ সরকারের দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের সাফল্য তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি, দুর্ভাগ্য আমাদের, করোনাভাইরাস, ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ তিনটা বছর সব কিছু বন্ধ ছিল, অর্থনীতির চাকা স্থবির ছিল, উন্নত দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি, পরিবহন ব্যয় বেড়েছে, স্যাংশন পাল্টা স্যাংশনে প্রত্যকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেল। এ জাহাজে এলো কেন? ওই জাহাজে এলো কেন? এটা ভিড়তে দেবে না, ওটা ভিড়তে দেবে না; শুধু দেশের ওপর স্যাংশন নয়, জাহাজের ওপরেরও স্যাংশন দিয়ে বসে আছে আমেরিকা। ফলে প্রত্যেকটা দেশে আজকে মুদ্রাস্ফীতি।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের কষ্ট হচ্ছে আমরা জানি, তারপরও আমরা বারবার চেষ্টা করছি মানুষের কষ্ট কীভাবে কমানো যায়। এই কষ্ট শুধু আমাদের একা না, সারা বিশ্বব্যাপী। বৈশ্বিক কারণেই কষ্ট। বাংলাদেশকে আমরা সুন্দরভাবে রেখেছিলাম, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছিলাম, মানুষের খাবার আছে।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া যখন গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেয় তখন আমি একটা কথা বলেছিলাম, আল্লাহতালা জন বুঝে ধন দেয়, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে গ্যাস একটু পাবেও না, দিতেও পারবে না। সত্যিই কিন্তু দিতে পারে নাই। যে ক’টা কূপ খনন করছে সবগুলো শুকনা। কোনো গ্যাস পায়নি, যারা কিনতে চেয়েছিল তারাও নিতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে, ভোটের অধিকারের কথা বলে, খালেদা জিয়ার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করেছিল, কত ভোট পড়েছিল? ২-৩ শতাংশ ভোটও পড়েনি? অথচ ঘোষণা দিলেন তৃতীয়বারের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের জনগণ এখন তাদের ভোটের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। সেই সচেতনতা আমরা চেষ্টা করেছি। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট চুরি করেছিল বলেই দেশে মানুষ ফুঁসে উঠেছিল। আন্দোলন করেছিল। আন্দোলনের খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে। ভোট চুরি যারা করেছিল তাদের মুখে যখন ভোটের কথা শুনি, গণতন্ত্রের কথা শুনি, মিলিটারি ডিটেকটেড পকেট থেকে বের হওয়া রাজনৈতিক দলের কাছে গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়। তাদের পারদর্শিতা কী এ দেশের মানুষ দেখেছে।’

২০০১ সালের নির্বাচনে কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ সবসময়ই জয়ী হয়েছে, জনগণ ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগ কখনো পরাজিত হয় নাই। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভোটে এসেছে, তার বাইরে কোনোভাবে ক্ষমতায় আসে নাই। আজকে তারা বলেন ‘ভোটারবিহীন’। কে ভোটার বিহীন? ভোটারনবিহীন তো ছিল খালেদা জিয়া, ভোটারবিহীন ছিল জিয়াউর রহমান, ভোটারবিহীন ছিল এরশাদ- এটা তারা ভুলে গেছে? তারা তো ভোটারবিহীন হিসেবে ক্ষমতা দখল করেছে। ২০০১ সালে আমাদের সম্পদ গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিএনপি। কই আমি তো দেখি নাই? আমি বলেছিলাম দেশের সম্পদ দেশের মানুষ ব্যবহার করবে, আগে তাদের স্বার্থ দেখবো, তাদের জন্য আমরা গ্যাস ব্যয় করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আন্দোলন করবে, সংগ্রাম করবে, আমাদের উৎখাত করবে, একদিকে ভালো হয়েছে, এখন যদি জ্বালাও-পোড়াও করে, এখন যদি অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন যদি মানুষ খুন করে, আমেরিকার ভিসা পাবে না। যাদের কথায় নাচে, তারাই খাবে, আমাদের কিছু করা লাগবে না। ওটা (ভিসানীতি) নিয়ে আমাদের চিন্তার কিছু নাই।’

তিনি বলেন, ‘তারা কিছু লোক জোগাড় করে আন্দোলন করবে, করতে দাও। আমি বলে দিয়েছি, যত আন্দোলন করার করুক, আমি কিছু বলবো না। নজর রাখতে হবে যে, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ বা তার পরবর্তী সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে মানুষকে পুড়ে মেরেছে, হাত পা কেটেছে, সেটা যেন করতে না পারে।’

কোনো চাপের কাছে দেশের মানুষ নতি স্বীকার করে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশি-বিদেশি যতই চাপ শোনান না কেন, সেই চাপের কাছে বাংলাদেশিরা নতি স্বীকার করে না। আমার দেশের মানুষের ভোটের অধিকার আমরা সুরক্ষিত করব। আমরা এ দেশে আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্র এনেছি। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা আছে বলে আজকে বাংলাদেশে উন্নত হয়েছে। আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে।’

বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। তারপরও খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের বাইরেও রপ্তানি করতে পারব। পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গার্মেন্টসের ওপর নির্ভর করে থাকব না। আমরা আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। এই ডিজিটাল ডিভাইস আমরা তৈরি করব। ইতোমধ্যে অনেক বিনিয়োগ আসছে। একশটা অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিয়েছি সেখানে বিনিয়োগের সুযোগ আসছে। আইসিটি, ডিজিটাল ডিভাইস এগুলো উৎপাদন করে আমরা রপ্তানি করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অনেক জ্ঞানী-গুণী আছে, যারা বুদ্ধি বেঁচে জীবিকা নির্বাহ করেন। বুদ্ধিজীবী। আমি বিদ্যুৎ দিয়েছি, তারা এয়ারকন্ডিশন রুমে বসে বক্তৃতা দেয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নেয়। প্রাইভেট টেলিভিশনও আওয়ামী লীগ সরকারই দিয়েছে। সেই টেলিভিশনের টক শোতে এসে আলোচনা করে- এই বাজেট আওয়ামী লীগ কোনো দিনও কার্যকর করতে পারবে না। আমি স্পষ্ট বলতে চাই, করতে পারব সেটা বুঝেশুনে আমরা বাজেট দিয়েছি। আমরা যা দিয়েছি আমরা তা করতে পারব।’

ছয় দফার ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বাংলার মানুষের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ছয় দফা দিয়েছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর এদশের সারমিক শাসন শুরু হয় এবং গণতন্ত্রকে কবর দেয়া হয়। মার্শাল ল জারি করে রাতে কারফিউ দিয়ে বছরের পর বছর এ দেশের মানুষের ওপর শোষণ চলে, নির্যাতন চলে। অথচ জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীনই করেছিলেন এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, অধিকার আদায়ের জন্য, দেশের মানুষকে একটি উন্নত জীবন দেয়ার জন্য। পাকিস্তান আমল থেকেই আমরা বঞ্চিত। এই বঞ্চিত মানুষগুলো ভাগ্য গড়তে জাতির পিতা ৬ দফা দেন।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান, সিমিন হোসেন রিমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ।

সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম।