প্রবাস ডেস্ক: ‘থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ; বৈধ পথে প্রবাসী আয়-গড়ব বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যে মিশরের রাজধানী কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস।
সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির পর শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টা ৩০ মিনিটে মনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।
ঢাকা থেকে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানোর পর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন, মিশরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রধান অতিথি (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ সচিব) খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের উপস্থিতিতে দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ওপর বক্তব্য দেন দূতালয় প্রধান ও শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কাউন্সিলর (শ্রম) মুহাম্মদ ইসমাইল হুসাইন।
মিশরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শক প্রবাসী বাংলাদেশি কাজী নূরে আলম বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের আরও দক্ষ হয়ে বিদেশ যেতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশ গমন করেন তাদের ঠিকমত বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা কাজ করানোর পরও অতিরিক্ত সময় কাজ করান, বিনিময়ে অর্থ পরিশোধ করেন না। বাংলাদেশি কর্মীরা অনেক অবহেলার শিকার হন। বাংলাদেশিদের বিদেশযাত্রার আগে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, গমনকৃত দেশের ভাষা, কাজের ক্ষেত্র এবং বেতন-ভাতা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন মর্মে উল্লেখ করেন।
কাউন্সেলর (শ্রম) মুহাম্মদ ইসমাইল হুসাইন আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, সরকার রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের কল্যাণে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রবাসী কর্মীকে গন্তব্য দেশের উন্নয়ন, নিজেদের দেশের পরিবার উন্নয়ন তথা জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি উপস্থিত প্রবাসী কর্মীদের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদের সুবিধাসমূহ অনিবন্ধিতদের নিবন্ধিত হওয়ার অনুরোধ করে পদ্ধতি সহজীকরণের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এবং ইউএনডিপির উপদেষ্টা কামরুন নাহার বলেন, বিদেশে কর্মরত নারী কর্মীদের সমস্যা নিরসনে দূতাবাস এবং বাংলাদেশ সরকারকে আরও তৎপর হতে হবে। বাংলাদেশ থেকে যেসব নারী কর্মী বিদেশ গমন করেন তাদের দক্ষ প্রশিক্ষণ, কাজের নিশ্চয়তা, বেতন-ভাতা জেনে-শুনে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য সব পেশা শ্রেণি তথা প্রবাসী কর্মীদের সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সবার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মিশরে অবৈধ কর্মীদের অনুকূলে বৈধকরণ প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে দূতাবাস কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে আগত মিশর প্রবাসী বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ দিয়ে রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, প্রবাসীদের যেকোনো সমস্যায় দূতাবাসকে অবহিত করলে দূতাবাস তাৎক্ষণিক কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে বলে আশ্বস্থ করেন।