Dhaka , Sunday, 19 May 2024

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অভিবাসী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৪

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : 02:20:50 am, Friday, 19 April 2024
  • 19 বার

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে অভিবাসী পাচারে জড়িত সন্দেহে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আলবেনিয়ার পুলিশ। একই সঙ্গে দুটি মানবপাচারকারী নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ইউরোপে বড় ধরনের মানবপাচার করছে বেশকিছু চক্র।

আলবেনিয়ার বিশেষ কার্যালয়ের বরাত দিয়ে ইতালির বার্তা সংস্থা আনসা জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীদের ইইউর বিভিন্ন দেশে পাচারে জড়িত বলে সন্দেহ করছে আলবেনিয়ার পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১১ জন পেশায় উদ্যোক্তা।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, চক্রটি অভিবাসীদের বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা পেতে সাহায্য করত। এরপর সেখান থেকে কাজের ভিসায় আলবেনিয়ায় নিয়ে আসত। তিরানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর অভিবাসীদের সহায়তা করতে সীমান্ত পুলিশের বেশ কিছু কর্মকর্তাকেও হাত করেছিল অপরাধী চক্রটি। এই অভিযোগে আলবেনিয়ান পুলিশের চার সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ছাড়া দুই অপরাধী সংগঠনের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের সময় পুলিশ কর্মকর্তারা অস্ত্র, জাল নথিসহ নগদ প্রায় ১০ লাখ ইউরো জব্দ করেছেন।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই চক্র দুটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আলবেনিয়ার বিশেষ দপ্তর। আগেই তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার অপরাধের বিভিন্ন প্রমাণ পেয়েছিল আলবেনিয়ার পুলিশ। বিশেষ কার্যালয়ের তদন্তকারীরা আদালতের সামনে বলেন, আলবেনিয়ায় বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানসংক্রান্ত আইনকে কাজে লাগিয়ে একটি অপরাধমূলক গোষ্ঠী সংগঠিত করেছিল অভিযুক্তরা।

এই চক্র দুটি মোট ২৫৩ জন বাংলাদেশিকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ডি ক্যাটাগরির কাজের ভিসায় আলবেনিয়ায় আসতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ইরান ও পাকিস্তানের নাগরিকদেরও টার্গেট করেছিল তারা।

অভিবাসীদের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ হাজার ইউরো নিয়ে তাদের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অনিয়মিত পথে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করত এই অপরাধী চক্রটির সদস্যরা। তারা অভিবাসীদের পরবর্তী যাত্রার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট পেতেও সহায়তা করত।

এই চক্রের বেশ কিছু সদস্যকে তিরানা বিমানবন্দরে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা অভিবাসীদের স্বাগত জানিয়ে অভিবাসীদের কসোভো সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হতো। কসোভো থেকে কাঙ্ক্ষিত ইউরোপের কোন দেশে তাদের যাত্রা করানো হতো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের আলোচিত ‘বলকান রুট’-এর অন্যতম প্রধান দেশ আলবেনিয়া। এই রুট ব্যবহারকারী অভিবাসীদের বেশিরভাগই এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তবে এসব অভিবাসীর অনেকেই দীর্ঘ সময়ের জন্য আলেবনিয়ায় আটক থাকেন। ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আলবেনিয়া কর্তৃপক্ষ ৯ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী শনাক্ত করেছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Robiul Islam

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অভিবাসী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৪

আপডেট টাইম : 02:20:50 am, Friday, 19 April 2024

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে অভিবাসী পাচারে জড়িত সন্দেহে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আলবেনিয়ার পুলিশ। একই সঙ্গে দুটি মানবপাচারকারী নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ভালো চাকরির লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ইউরোপে বড় ধরনের মানবপাচার করছে বেশকিছু চক্র।

আলবেনিয়ার বিশেষ কার্যালয়ের বরাত দিয়ে ইতালির বার্তা সংস্থা আনসা জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা বাংলাদেশ থেকে অভিবাসীদের ইইউর বিভিন্ন দেশে পাচারে জড়িত বলে সন্দেহ করছে আলবেনিয়ার পুলিশ। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১১ জন পেশায় উদ্যোক্তা।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, চক্রটি অভিবাসীদের বাংলাদেশ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা পেতে সাহায্য করত। এরপর সেখান থেকে কাজের ভিসায় আলবেনিয়ায় নিয়ে আসত। তিরানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর অভিবাসীদের সহায়তা করতে সীমান্ত পুলিশের বেশ কিছু কর্মকর্তাকেও হাত করেছিল অপরাধী চক্রটি। এই অভিযোগে আলবেনিয়ান পুলিশের চার সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ ছাড়া দুই অপরাধী সংগঠনের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানের সময় পুলিশ কর্মকর্তারা অস্ত্র, জাল নথিসহ নগদ প্রায় ১০ লাখ ইউরো জব্দ করেছেন।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে এই চক্র দুটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে আলবেনিয়ার বিশেষ দপ্তর। আগেই তাদের বিরুদ্ধে মানবপাচার অপরাধের বিভিন্ন প্রমাণ পেয়েছিল আলবেনিয়ার পুলিশ। বিশেষ কার্যালয়ের তদন্তকারীরা আদালতের সামনে বলেন, আলবেনিয়ায় বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানসংক্রান্ত আইনকে কাজে লাগিয়ে একটি অপরাধমূলক গোষ্ঠী সংগঠিত করেছিল অভিযুক্তরা।

এই চক্র দুটি মোট ২৫৩ জন বাংলাদেশিকে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে ডি ক্যাটাগরির কাজের ভিসায় আলবেনিয়ায় আসতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ইরান ও পাকিস্তানের নাগরিকদেরও টার্গেট করেছিল তারা।

অভিবাসীদের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ হাজার ইউরো নিয়ে তাদের বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অনিয়মিত পথে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করত এই অপরাধী চক্রটির সদস্যরা। তারা অভিবাসীদের পরবর্তী যাত্রার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট পেতেও সহায়তা করত।

এই চক্রের বেশ কিছু সদস্যকে তিরানা বিমানবন্দরে নিয়োগ করা হয়েছিল। সেখানে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসা অভিবাসীদের স্বাগত জানিয়ে অভিবাসীদের কসোভো সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হতো। কসোভো থেকে কাঙ্ক্ষিত ইউরোপের কোন দেশে তাদের যাত্রা করানো হতো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের আলোচিত ‘বলকান রুট’-এর অন্যতম প্রধান দেশ আলবেনিয়া। এই রুট ব্যবহারকারী অভিবাসীদের বেশিরভাগই এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের নাগরিক। তবে এসব অভিবাসীর অনেকেই দীর্ঘ সময়ের জন্য আলেবনিয়ায় আটক থাকেন। ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে আলবেনিয়া কর্তৃপক্ষ ৯ হাজার অনিয়মিত অভিবাসী শনাক্ত করেছিল।